
নাটোরের সিংড়ার নাগর নদে জাল ও পলো দিয়ে মাছ ধরার উৎসব শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দিনব্যাপী নাটোরের সিংড়া উপজেলার খরসতি, সারদানগর ও আত্রাই সীমান্ত এলাকায় দল বেঁধে উৎসবে মেতে ওঠেন শৌখিন মৎস্যশিকারিরা।
দুপুরে সারদানগর এলাকার বাসিন্দারা জানান, প্রতিবছরই জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে নাগর নদে জাল ও পলো দিয়ে মাছ ধরার উৎসব হয়। উপজেলার খরসতি, সারদানগর ও আত্রাইসহ আশপাশের গ্রাম থেকে শত শত মানুষ পলো ও জাল নিয়ে বেলা ১১টার দিকে নাগর নদে নেমে পড়েন। সবার মুখে ছিল গ্রামবাংলার পুরোনো গান। হইহুল্লোড় করে তাঁরা জাল ও পলো ফেলতে থাকেন। বেলা তিনটা পর্যন্ত প্রায় সবার হাতেই ধরা পড়ে ছোট–বড় বোয়াল, শোল ও পোনা মাছ। ঐতিহ্যবাহী এই উৎসব দেখতে উৎসুক জনতার কোনো কমতি ছিল না। নদের তীরে দাঁড়িয়ে অনেকেই মাছ ধরার ছবি তোলেন মুঠোফোনে। অনেকে এই দৃশ্যের ভিডিও ধারণ করেন।
জয়নগর গ্রামের মিরাজ আলী বলেন, ‘বোরো ধান লাগানো শেষ। এখন কাজকাম কম। এই সুযোগে দল বাঁধি মাছ ধরতে নামিছিনু। দুইডা বোয়াল পাইছি। একটা আলু দিয়ে ঘাঁটি খাব, আর একটা জামাই-মেয়ের বাড়িতে পাঠাব।’
সারদানগরের রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘এবার অন্য বছরের তুলনায় নদে মাছ বেশি পাওয়া গেছে। কমবেশি সবাই পাইছে। আমি এক ঘণ্টায় পাঁচটা বোয়াল পাইছি।’
নদের তীরে দাঁড়ানো কিশোর মোবারক হোসেন জানায়, তার বড় দুই ভাই মাছ ধরছেন। তাঁরা মাছ ধরে তার কাছে রাখছেন। পাশাপাশি জাল ও পলো ফেলার কারণে নদের মাছের পালানোর জায়গা ছিল না। তাই কেউ মাছ পায়নি এমনটা হয়নি। কেউ খালি হাতে বাড়ি ফিরবে না।
খরসতি গ্রামের লিয়াকত আলী বলেন, এ বছর প্রথম মাছ ধরতে নেমেছেন। আগামী এক মাস মাঝেমধ্যেই এ রকম মাছ ধরতে নামবেন এলাকাবাসী।
মাছ ধরা শেষে সবাই মাছ ঝুলিয়ে পলো-জাল কাঁধে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। অনেকে মুঠোফোনে সেলফি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন।
চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রশাসনের তৎপরতায় চলনবিলের নদ-নদী ও খাল-বিলে এবার প্রচুর দেশীয় প্রজাতির মাছ রয়েছে। তাই বিল অঞ্চলের মানুষ এবার পেট পুরে মাছ খেতে পারবেন।