নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় গণপিটুনিতে ফখরুল ইসলাম (২৫) নামের এক যুবক নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয়ের আরও আটজনকে আসামি করা হয়েছে। নিহত ফখরুলের বাবা বদিউজ্জামান বাদী হয়ে গতকাল সোমবার রাতে বেগমগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে গতকাল সকালে উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ হাজীপুর গ্রামে মাইকে ঘোষণা দিয়ে ফখরুল ইসলামকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। এ সময় ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান। গতকাল রাতে জানাজা শেষে ফখরুল ইসলামের লাশ চৌমুহনী পৌরসভার পৌর হাজীপুর গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। তাঁর দুই বছরের একটি ছেলেসন্তান রয়েছে।
পুলিশ জানায়, ফখরুলের বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ থানায় চাঁদাবাজির দুটি মামলা এবং সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ডের জড়িত থাকার অভিযোগে চারটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে দুটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ছিল।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম এ বারি প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে। এজাহারভুক্ত আসামিরা সবাই পলাতক।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকাল আনুমানিক আটটার দিকে হাজীপুর ১ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল মোতালেবের ছেলে মিজানুর রহমান বাড়ি থেকে অটোরিকশায় চৌমুহনী বাজারে যাচ্ছিলেন। পথে ফখরুল তাঁকে গতি রোধ করে চাঁদা দাবি করেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হলে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজন জড়ো করা হয়। মুহূর্তের মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হয়ে ফখরুলকে গণপিটুনি দেন। এতে ঘটনাস্থলে ফখরুলের মৃত্যু হয়েছে।
হাজীপুর ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী আবদুল মোতালেব বলেন, ‘আমার ছেলে বাড়ি থেকে ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে দোকানে যাচ্ছিল। পথে ফখরুল অটোরিকশা থেকে নামিয়ে কিছু টাকা ছিনিয়ে নেয়। চিৎকারে এলাকার লোকজন এগিয়ে এসে ফখরুলকে গণপিটুনি দেয়।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন নিহত ফখরুলের বাবা বদিউজ্জামান। তিনি বলেন, ‘পূর্বশত্রুতার জেরে আমার ছেলে ফখরুলকে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’