খুলনায় এনসিপির সহযোগী সংগঠন শ্রমিক শক্তির নেতা মোতালেব শিকদারকে গুলির ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার শামীম শিকদার ওরফে ঢাকাইয়া শামীম (বাঁয়ে) ও মাহাদিন। শনিবার দুপুরে খুলনা র‍্যাব–৬ এর সদর দপ্তরে
খুলনায় এনসিপির সহযোগী সংগঠন শ্রমিক শক্তির নেতা মোতালেব শিকদারকে গুলির ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার শামীম শিকদার ওরফে ঢাকাইয়া শামীম (বাঁয়ে) ও মাহাদিন। শনিবার দুপুরে খুলনা র‍্যাব–৬ এর সদর দপ্তরে

খুলনায় এনসিপির শ্রমিকনেতাকে গুলির ঘটনায় ‘ঢাকাইয়া শামীম’সহ আরও দুজন গ্রেপ্তার

খুলনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সহযোগী সংগঠন জাতীয় শ্রমিক শক্তির বিভাগীয় আহ্বায়ক মো. মোতালেব শিকদারকে গুলির ঘটনায় শামীম শিকদার ওরফে ডিকে শামীম ওরফে ঢাকাইয়া শামীম এবং মাহদিন নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব–৬। গতকাল শুক্রবার রাতে নগরের সোনাডাঙ্গা থানার বসুপাড়া এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে একই মামলায় সন্দেহভাজন মো. আরিফ এবং এনসিপির যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তির খুলনা জেলা শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব তনিমা তন্বীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে মামলাটিতে গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়াল ৪।

শনিবার দুপুরে খুলনা র‍্যাব–৬–এর সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাহিনীটির মুখপাত্র ও উপ-অধিনায়ক মেজর মো. নাজমুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ঘটনার পরপরই র‍্যাব–৬-এর একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পাশাপাশি বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হয়। পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দেওয়া তথ্য এবং ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনার মাধ্যমে কয়েকজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করে গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২৫ ডিসেম্বর রাত সাড়ে আটটার দিকে সন্দেহভাজন মো. আরিফকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।

র‍্যাব কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম জানান, শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে বসুপাড়া এলাকা থেকে শামীম শিকদার ওরফে ঢাকাইয়া শামীম এবং মাহদিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শামীম ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি নিজেই মোতালেব শিকদারের মাথায় গুলি করেন বলে র‍্যাবকে জানিয়েছেন।

গত সোমবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকায় জাতীয় যুবশক্তির খুলনা জেলা শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব তনিমা তন্বীর ভাড়া বাসায় মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হন। আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, গুলিটি তাঁর মাথার চামড়া স্পর্শ করে বেরিয়ে গেছে। বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত।

গ্রেপ্তার শামীমকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে মেজর নাজমুল ইসলাম বলেন, তনিমা তন্বীর ভাড়া করা ফ্ল্যাটে মাদক কারবার ও অসামাজিক কার্যকলাপ চলত। ঘটনার দিন সকাল সাতটার দিকে শামীমসহ চার-পাঁচজন সহযোগী সেখানে যান। এর আগে ওই ফ্ল্যাটে তন্বী, মোতালেব শিকদার, আরিফ, ইফতি, তানভীর (তন্বীর স্বামী), ইমরান (তন্বীর বন্ধু) ও ইফতির এক আত্মীয় উপস্থিত ছিলেন। মাদক উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়েও কিছু না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে শামীম তাঁর কাছে থাকা অস্ত্র দিয়ে মোতালেব শিকদারের মাথায় গুলি করেন। তবে গুলিটি প্রাণঘাতী না হওয়ায় তিনি বেঁচে যান।

র‍্যাব জানায়, শামীম শিকদার ওরফে ঢাকাইয়া শামীম সোনাডাঙ্গা এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসীদের একজন। তাঁর বিরুদ্ধে দস্যুতা, বিশেষ ক্ষমতা আইন, মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, সোনাডাঙ্গা এলাকায় মাদক ব্যবসা ও মাদকের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধের জেরেই এই হত্যাচেষ্টা করা হয়।

এদিকে মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তরের পর তদন্ত অনেকটাই এগিয়েছে বলে জানিয়েছেন খুলনা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৈয়মুর ইসলাম। তিনি বলেন, ঘটনার সময় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে জোর চেষ্টা চলছে।