সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া পাথর উদ্ধারে যৌথবাহিনী অভিযান শুরু করেছে। গতকাল বুধবার ধলাই নদ এলাকায়
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া পাথর উদ্ধারে যৌথবাহিনী অভিযান শুরু করেছে। গতকাল বুধবার ধলাই নদ এলাকায়

সিলেটে লুটের পাথরবাহী ১৩০ ট্রাক জব্দ, ফেলা হচ্ছে সাদাপাথর এলাকায়

সিলেটে লুট হওয়া পাথর উদ্ধারে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে অভিযান শুরু করেছে যৌথ বাহিনী। গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে এ অভিযান শুরু হয়। সারা রাত বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলে। এসব অভিযানে পাথরবোঝাই ১৩০টি ট্রাক জব্দ করা হয়। এসব পাথর আবার সাদাপাথরে প্রতিস্থাপন করা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত থেকে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হয়েছে। এখনো চলছে। অভিযানে জব্দ করা পাথর আবার সাদাপাথরে নিয়ে রাখা হবে। এ ছাড়া আজ কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাটে পৃথক দুটি তল্লাশিচৌকি স্থাপন করে পাথর তোলা বন্ধে সার্বক্ষণিক নজরদারি শুরু হবে।

সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের সিলেট ক্লাবের সামনে গতকাল রাতে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হয়। অভিযানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা আছেন। এ সময় কোম্পানীগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা পাথরবোঝাই ট্রাক আটক করা হয়। এসব ট্রাক পাথর নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। আজ সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পাথরবোঝাই ১৩০টি ট্রাকের পাথর জব্দ করা হয়।

সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রের আশপাশে বিভিন্ন জায়গায় পাথর লুট করা হয়েছে। তার একটি সংরক্ষিত ব্যাংকার এলাকা। গত মঙ্গলবার সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে

এদিকে গতকাল বিকেলে সাদাপাথর ও আশপাশের এলাকা থেকে জেলা প্রশাসনের অভিযানে জব্দ করা ১২ হাজার ঘনফুট পাথর রাতে সাদাপাথর এলাকায় প্রতিস্থাপন করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরপর সিলেট জেলার ৮টি পাথরকোয়ারি ও কোয়ারিবহির্ভূত ১০টি এলাকা থেকে পাথর লুটপাট শুরু হয়। বিশেষ করে কোম্পানীগঞ্জের শাহ আরেফিন টিলা, ভোলাগঞ্জ পাথরকোয়ারি ও সংরক্ষিত বাঙ্কার এলাকা এবং গোয়াইনঘাটের প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) জাফলং ও পর্যটনকেন্দ্র বিছনাকান্দি থেকে গণহারে পাথর লুট হয়।
সম্প্রতি দেশ-বিদেশে সুপরিচিত পর্যটনকেন্দ্র কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথরের অন্তত ৮০ শতাংশ পাথর সাবাড় হওয়ায় দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়। প্রশাসন এখন লুট হওয়া পাথর জব্দে ও লুটপাট ঠেকাতে তৎপর হয়েছে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর পুলিশি কার্যক্রমে শিথিলতার সুযোগে পর্যটনকেন্দ্র ও প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) সিলেটের জাফলংয়ে পাথর লুট করা হয়। ছবিটি গত ১২ ফেব্রুয়ারির

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সাদাপাথরসহ সিলেটের অন্যান্য জায়গা থেকে পাথর লুট বন্ধে করণীয় নির্ধারণে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গতকাল বৈঠক হয়। বৈঠক থেকে সর্বসম্মতিতে পাঁচটি সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্তগুলো হলো জাফলং ইসিএ এলাকা ও সাদাপাথর এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যৌথ বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে; গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় পুলিশের তল্লাশিচৌকিতে যৌথ বাহিনী সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে; পাথর ভাঙার অবৈধ যন্ত্রের বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্নসহ বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের অভিযান চলবে; পাথর চুরির সঙ্গে জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে ও চুরি হওয়া পাথর উদ্ধার করে আগের অবস্থানে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।

সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রের এসব জায়গায় আগে পাথরে ভরা ছিল। সব লুট হয়ে গেছে। গত মঙ্গলবার সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জে

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে প্রথমে সিলেট-ভোলাগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের সালুটিকর এলাকায়, পরে সিলেট ক্লাবের সামনে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে যৌথ বাহিনী অভিযান শুরু করে। আজ সকাল থেকে সিলেট শহরতলির বড়শালা এলাকায় যৌথ বাহিনী তল্লাশিচৌকি বসিয়ে অভিযান চালাচ্ছে।