নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পদ্মা ও যমুনা নদীতে এখনো শিকার হচ্ছে মহাবিপন্ন বাগাড় মাছ। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে পদ্মা ও যমুনা নদীর মোহনায় জেলেদের জালে ধরা পড়া প্রায় ২৭ কেজি ওজনের একটি বাগাড় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে বিক্রি হয়। স্থানীয় এক মৎস্য ব্যবসায়ী বাগাড়টি ৪০ হাজার ৫০০ টাকায় কিনে ৪৩ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।
মৎস্যজীবী ও ব্যবসায়ীরা জানান, নদীতে পানি বাড়ায় জেলেদের জালে মাঝেমধ্যে বড় বড় মাছ ধরা পড়ছে। রুই, কাতলা, পাঙাশ ও বড় ইলিশের পাশাপাশি ধরা পড়ছে বাগাড় মাছও।
সিরাজগঞ্জের বেলকুচির নাকালিয়ার জেলে গোপাল হালদার আজ দুপুরে চর করনেশনা এলাকার পদ্মা ও যমুনা নদীর মোহনায় জাল ফেলেন। এ সময় তাঁর নৌকায় বড় একটি বাগাড় ধরা পড়ে। এরপর তিনি সেটি বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন দৌলতদিয়ার ৬ নম্বর ফেরিঘাটে। ফেরিঘাট এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে মাছটি কিনে নেন।
আজ সন্ধ্যায় শাহজাহান শেখ বলেন, বাগাড়টির ওজন প্রায় ২৭ কেজি। ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে ৪০ হাজার ৫০০ টাকায় তিনি সেটি কিনে নেন। মাছটি তাঁর আড়তে এনে বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করেন। বিকেলে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকার এক সিঙ্গাপুরপ্রবাসীর কাছে ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি দরে ৪৩ হাজার ২০০ টাকায় মাছটি বিক্রি করেন। বিকাশে টাকা পরিশোধের পর বাগাড়টি নারায়ণগঞ্জে পাঠানো হয়।
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের তালিকা অনুযায়ী, বাগাড় মহাবিপন্ন। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, বাগাড় শিকার, ধরা ও বিক্রি দণ্ডনীয় অপরাধ।
বিষয়টি জানেন কি না, জানতে চাইলে শাহজাহান শেখ বলেন, ‘কয়েক দিন আগে স্থানীয় প্রশাসন বাগাড় বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু জেলেদের জালে ধরা পড়লে কী করবেন? জেলেরা বিক্রির জন্য ঘাটে আড়তে নিয়ে আসেন। এ সময় নিলামে তোলা হলে আমরাও কিনে অন্যত্র বিক্রি করে দিই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজবাড়ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুল বলেন, বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনে বাগাড় শিকার ও বিক্রি দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও মৎস্য সংরক্ষণ আইনে এমন কিছু না থাকায় তাঁরা পদক্ষেপ নিতে পারেন না। উপজেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।