সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষককে মুঠোফোনে পেটানোর হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় এক বিএনপি নেতা। গতকাল বুধবার রাতে এই হুমকির অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
হুমকি পাওয়া ওই শিক্ষক হলেন জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. এমদাদুল হক। হুমকিদাতা হলেন উপজেলার চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রাজা মিয়া।
অডিও রেকর্ডে শোনা যায়, রাজা মিয়া প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হককে কল করেন। শিক্ষক কল ধরেই তাঁকে সালাম দেন। কিন্তু রাজা মিয়া সালামের উত্তর না দিয়েই তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। শিক্ষককে উদ্দেশ্য করে রাজা মিয়া বলেন, ‘আমার সামনেদি হখলরে রেজাল্টের কথা কইয়া গেলায়। আমারে জিকাইলায় না। তুই বড় বেয়াদব। আমি তরে পিটমু (পিটুনি), তোর কোনো বাপে ফিরাইত পারতনায়। জিডি ধরাইতেনি, গিয়া ধরা। তুই আমার লগে বহুত বেয়াদবি করছস।’
হুমকির এই অডিও রেকর্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। প্রধান শিক্ষক বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছেন।
শিক্ষক এমদাদুল হকের ভাষ্য, স্কুলের মাঠে মাটি ভরাট কাজের জন্য ইউএনও কিছু বরাদ্দ দেন। কাজ করতে গেলে ওই বিএনপি নেতা বাধা দেন। শিক্ষক বিষয়টি ইউএনওকে অবহিত করে প্রশাসনের সহযোগিতায় কাজটি সম্পন্ন করেন। রাজা মিয়া এই কাজ থেকে কোনো সুবিধা না পেয়ে শিক্ষকের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। এ ছাড়া এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর তাঁকে (রাজা মিয়া) না জানানোয় তিনি ক্ষুব্ধ হন।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বিএনপি নেতা রাজা মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে তিনি ধরেননি। মুঠোফোনে বার্তা পাঠিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।
জগন্নাথপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের একাডেমিক সুপারভাইজার অরূপ কুমার রায় বলেন, ওই শিক্ষক বিষয়টি তাঁকে জানিয়েছেন। তিনি ইউএনওর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন।
জগন্নাথপুরের ইউএনও বরকত উল্যাহ বলেন, প্রধান শিক্ষক চাইলে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবেন। এ বিষয়ে তাঁকে সহযোগিতা করা হবে।