
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (শাকসু) নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসাহের পাশাপাশি শঙ্কাও বাড়ছে। নভেম্বরের প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিলেও প্রশাসনের ধীরগতির কারণে এখনো নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়নি। গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করা ছাড়া দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধনীর জন্য শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের জুলাইয়ের প্রথমার্ধে প্রবিধি (গঠনতন্ত্র) পুনঃপ্রণয়ন কমিটি গঠন করেন কর্তৃপক্ষ। এর প্রায় তিন মাস পর ৮ অক্টোবর গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করা হয়। এর আগে শাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে ছাত্ররাজনীতি চালুর বিষয়ে ছাত্রসংগঠনগুলো দাবি জানিয়ে আসছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ সেপ্টেম্বর শর্ত সাপেক্ষে দলীয় ব্যানারে ছাত্ররাজনীতি চালু করে কর্তৃপক্ষ। শাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে গত তিন মাসে দৃশ্যমান আর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, শিক্ষকসহ অন্তত পাঁচজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শাকসু নির্বাচনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য গত শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে অনলাইনে একটি মতবিনিময় সভা করেন উপাচার্য। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ২০০ শিক্ষক অংশ নেন। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সার্বিক বিষয়ে আলোচনার পর শাকসু নিয়ে শিক্ষকদের সহযোগিতা কামনা করে বক্তব্য শেষ করেন। শেষ মুহূর্তে একজন শিক্ষক উপাচার্যের কাছে সভার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। একপর্যায়ে অনলাইন বৈঠকে কয়েকজন শিক্ষকের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এরপর কয়েকজন শিক্ষক শাকসুর বিষয়ে যৌক্তিক সময় ও সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেন। শাকসুর বিষয়ে আলোচনার জন্য ওই সভা ডাকা হলেও উদ্দেশ্য সফল হয়নি।
গত রোববারের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন করে গঠনতন্ত্র হস্তান্তরের কথা ছিল। প্রশাসনের ধীরগতির কার্যক্রম ও শিক্ষকদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডার কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শাকসু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা বেড়েছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও আলোচনা-সমালোচনা করছেন।
সমাজকর্ম বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আলী আব্বাস বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, কতিপয় শিক্ষক শাকসু নির্বাচনে সহযোগিতা করবেন না। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁরা নির্বাচন চান না। আমরা শিক্ষার্থীরা মনে করি, বর্তমানে আমাদের ক্যাম্পাসে শাকসুর প্রয়োজনীয় পরিবেশ-পরিস্থিতি বিদ্যমান।’
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরীকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি। সহ-উপাচার্য সাজেদুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচনের অনেক কাজই আমরা এগিয়ে নিয়ে এসেছি। স্থগিত হয়নি, কাজ চলমান আছে। নির্বাচন সফল করতে আমরা সব পক্ষের সহযোগিতা কামনা করি।’