উদ্ধার হওয়া দেশীয় অস্ত্র, গুলিসহ অন্যান্য সরঞ্জাম
উদ্ধার হওয়া দেশীয় অস্ত্র, গুলিসহ অন্যান্য সরঞ্জাম

থানা থেকে লুট হওয়া গুলি সন্ত্রাসীদের ‘টর্চার সেলে’

চট্টগ্রামের চান্দগাঁও এলাকায় গতকাল সোমবার রাতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোলাগুলির ঘটনায় র‍্যাব-পুলিশের যৌথ অভিযানে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে বেশ কিছু দেশি অস্ত্র, গুলি ও গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে থানা থেকে লুট হওয়া গুলি ও গুলির খোসা রয়েছে বলে জানিয়েছে র‍্যাব-পুলিশ। গতকাল রাতে নগরের চান্দগাঁও বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার এলাকার একটি ভবনের তৃতীয় তলার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে এসব উদ্ধার হয়।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার ১১ ব্যক্তি ‘সন্ত্রাসী’ শহিদুল ইসলাম ওরফে বুইসার সহযোগী। যে বাসা থেকে গুলি ও দেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে, সেটিকে তাঁরা ‘টর্চার সেল’ হিসেবে ব্যবহার করতেন।

এর আগে নগরের ডবলমুরিং-পাহাড়তলীসহ বিভিন্ন এলাকায় থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র-গুলি উদ্ধার হয়। এ সময় পুলিশ জানায়, এগুলো ছিনতাই ও ডাকাতিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সারা দেশের মতো চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় অস্ত্র-গুলি লুটের ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তার ১১ জন হলেন বোরহান উদ্দিন, মোহাম্মদ মারুফ, আল আমিন, মিজানুর রহমান, রোকন উদ্দিন, আলী আহাম্মদ, শান্ত মজুমদার, মো. অন্তর, বিরো পাল, মোহাম্মদ রাহাত ও মোহাম্মদ ফরহাদ।

চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব উদ্দিন রাতে প্রথম আলোকে বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জামিনে থাকা সন্ত্রাসী ইসমাইল হোসেন ওরফে টেম্পো ও শহিদুল ইসলাম ওরফে বুইসার বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি হয়। এ সময় কেউ হতাহত হননি। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার এলাকায় সন্ত্রাসী শহিদুল ইসলামের একটি আস্তানার সন্ধান পায়। সেখানে থানা থেকে লুট হওয়া দুটি গুলি ও গুলির খোসা পাওয়া গেছে।

ওসি আরও বলেন, আস্তানাটিকে টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করা হতো। যাঁরা এসব সন্ত্রাসীর চাহিদামতো চাঁদা কিংবা টাকা দিতেন না, তাঁদের সেখানে নিয়ে নির্যাতন করা হতো। আস্তানায় প্লায়ার্স, রামদা, সিসিটিভি ক্যামেরাসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম পাওয়া গেছে।

পুলিশের সঙ্গে অভিযানে ছিল র‍্যাব-৭–এর একটি দল। র‍্যাব চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক এ আর এম মোজাফফর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সন্ত্রাসীদের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। তাঁদের অন্য সহযোগীদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক দোকানদার প্রথম আলোকে বলেন, বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার এলাকার ভবনটির তৃতীয় তলায় মাঝেমধ্যে কান্নার শব্দ পেতেন তাঁরা। তবে ভয়ে কাউকে কিছু বলতেন না।

ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে ১৯টি ও শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা রয়েছে। নগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আমিরুল ইসলাম রাতে প্রথম আলোকে বলেন, সন্ত্রাসী ইসমাইল ও শহিদুলকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।