খুলনার ডুমুরিয়ায় ২৭টি সুন্দি কাছিম বিক্রির দায়ে এক যুবককে ২১ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। রোববার দুপুরে উপজেলার ভান্ডারপাড়া ইউনিয়নের ঘোনাবান্দা মধ্যপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই যুবককে আটক করা হয়। তাঁর বাড়ি থেকে এসব কাছিম উদ্ধার করা হয়।
বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ খুলনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দু-এক দিন রেখে পরে এগুলো উপযুক্ত আবাসস্থলে অবমুক্ত করা হবে।
দণ্ড পাওয়া যুবকের নাম জয় ঢালী (২২)। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডুমুরিয়া উপজেলা প্রশাসন ও বন অধিদপ্তর খুলনার বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের যৌথ অভিযানে কাছিমগুলো উদ্ধার হয়। এই কাছিম বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-২ অনুযায়ী সংরক্ষিত। এ ধরনের প্রাণী হত্যা, শিকার, খাঁচায় রাখা, পরিবহন, বিক্রয় ইত্যাদি আইনত নিষিদ্ধ।
বন বিভাগ ও স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, জয় ঢালী ও তাঁর বাবা নিতাই ঢালী দীর্ঘদিন ধরে কাছিমের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা দুজনই নিয়মিতভাবে কাছিম শিকার ও বিক্রি করতেন বলে অভিযোগ আছে।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল বলেন, সুন্দি কাছিমের আরেক নাম চিতি কাছিম। নোনাপানিতে সুন্দি কাছিমের দেখা পাওয়া যায় না। এটি টেস্টুডিনিস বর্গের ট্রায়োনিকিডি পরিবারের সরীসৃপ। ইংরেজি নাম ‘Indian flapshelled turtle’, বৈজ্ঞানিক নাম ‘Lissemys punctata’। আগে দেশের সব জলাশয়ে সুন্দি কাছিম দেখা গেলেও এখন তেমন দেখা যায় না। শুকনো মৌসুমে মাছ ধরার জন্য খালবিল, হাওর-বাঁওড় সেচ করলেই দেখা মিলত। বর্তমানে আবাসস্থল ধ্বংস, অবৈধ শিকার ও জলাশয় দূষণের কারণে বিপন্ন হচ্ছে প্রাণীটি।
প্রাণী বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এদের খোলসে ছোপ ছোপ দাগ থাকে। বাংলাদেশ ছাড়াও নেপাল, পাকিস্তান, ভারত, মিয়ানমার ও শ্রীলঙ্কায় আছে সুন্দি কাছিম। মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত এদের প্রজনন মৌসুম। মিঠাপানির কাছিম হওয়ায় ডিম দিতে ওই সময়ে ডাঙায় ওঠে এরা। তাদের খাদ্যতালিকায় রয়েছে জলজ উদ্ভিদ ও ছোট ছোট প্রাণী।