
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় সন্তানদের জন্য ‘পোষ্য কোটা’–সুবিধা পুনর্বহাল ও সব বৈষম্য দূর করার দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করেছেন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। আজ সোমবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। কর্মবিরতির অংশ হিসেবে পরীক্ষা ও জরুরি সেবা ছাড়া অধিকাংশ বিভাগ ও দপ্তরের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। একই দাবিতে আগামীকাল পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা। এর প্রতিবাদে পাল্টা বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পোষ্য কোটা পুনর্বহাল, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা বৃদ্ধি ও কোয়ার্টার সংস্কারসহ প্রাতিষ্ঠানিক সব সুবিধা বাস্তবায়নের দাবি জানান। দাবি আদায় না হলে তাঁরা ভবিষ্যতে আরও কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। প্রশাসনিক ভবনের সামনে কর্মসূচিতে বক্তারা বলছেন, তাঁরা নির্ধারিত আসনের বাইরে তাঁদের সন্তানদের ভর্তির জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা চাইছেন। নির্ধারিত আসনের বাইরে গিয়ে যখন তাঁরা সুবিধা নেবেন, তখন সেটি পোষ্য কোটা থাকে না। কোটা হচ্ছে নির্ধারিত আসনের একটা ভাগ। তাঁরা সেই আসনের ভাগ চান না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, ‘আমরা অনেক ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। আমাদের প্রথম দাবি, প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা সংস্কার করতে হবে। ভর্তি পরীক্ষায় আমাদের সন্তানদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। দেশের ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, সিলেট বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্তানদের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে, তাহলে আমরা কেন বঞ্চিত হব? তা ছাড়া আমাদের সন্তানেরা যারা ভর্তি পরীক্ষায় পাস করে যোগ্যতা অর্জন করে, শুধু তাদের জন্য এই সুবিধাটা চাইছি আমরা।’
ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক নুরুল আলম বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক-কর্মকর্তাদের যে সুবিধা দেওয়া হতো, সেটি হঠাৎ করে বন্ধ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সেনাবাহিনী ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সুবিধা চালু আছে। আমরা নির্ধারিত আসনের বাইরে এই সুবিধাটা চাইছি। এটা কোনো পোষ্য কোটা নয়।’
পাল্টা কর্মসূচির ঘোষণা শিক্ষার্থীদের
শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এই আন্দোলনকে অযৌক্তিক দাবি করে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন শিক্ষার্থীরা। অযৌক্তিক পোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনা প্রতিহত করতে আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় প্যারিস রোডে বিক্ষোভ সমাবেশ করবেন তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘একটি অন্যায্য দাবিকে রুখে দিতে প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। উক্ত বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত থেকে অন্যায্য পোষ্য কোটার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থী সমাজকে আহ্বান জানাচ্ছি।’