Thank you for trying Sticky AMP!!

হরিজন তরুণকে গরম তেলে ঝলসে দেওয়ার ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ১

বগুড়া জেলার মানচিত্র

বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার পৌর এলাকায় হরিজন সম্প্রদায়ের এক তরুণকে ধাক্কা দিয়ে গরম তেলে ফেলে দিয়ে হাত ঝলসে দেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় মাসুদ রানা (৩৩) নামের সান্তাহার শহরের হোটেল এশিয়ার কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল রোববার রাতে আহত মিঠুন বাঁশফোরের (২৩) ভাই কালুয়া বাঁশফোর বাদী হয়ে মামলা করেন। পুলিশ রাতেই মাসুদ রানাকে গ্রেপ্তার করে। তিনি নওগাঁ সদর উপজেলার পার-নওগাঁ খলিফাপাড়ার রমজান আলীর ছেলে।

Also Read: গরম তেলে ঝলসে দেওয়ার বিচারসহ হোটেলে বসে খাওয়ার অধিকার চান হরিজনেরা

পরিবারের সদস্য ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মিঠুন বাঁশফোর নওগাঁর আত্রাই উপজেলার জাত্রামূল সুইপার কলোনির মদন বাঁশফোরের ছেলে। তিনি ১০ ডিসেম্বর সান্তাহারে তাঁর আত্মীয় পিন্টু বাঁশফোরের বাড়িতে বেড়াতে যান। পরদিন বিকেলে আত্মীয় পিন্টুসহ তিনজন সান্তাহার পৌর এলাকার এশিয়া হোটেলে খেতে যান। ওই হোটেলে হরিজন সম্প্রদায়সহ নিম্ন বর্ণের লোকজনের জন্য প্লেট ও গ্লাস স্পর্শ করা এবং হোটেলে বসে খাবার খাওয়া নিষিদ্ধ। পরে হোটেলের নিয়ম মেনে তাঁরা প্যাকেট বিরিয়ানি কেনেন। হোটেলে বসে খাওয়া নিষিদ্ধ হওয়ায় তাঁরা বিরিয়ানির সঙ্গে মাংসের আলাদা ঝোল চান। কিন্তু হোটেলের কর্মচারীকে স্পর্শ করায় তাঁরা ঝোল দিতে রাজি হননি। এ নিয়ে হোটেল কর্মচারীর সঙ্গে তাঁদের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে হোটেলের কর্মচারীরা মিঠুনকে মারধর করে ধাক্কা দিয়ে হোটেল থেকে বের করে দেন। ধাক্কায় তিনি গরম কড়াইয়ের ফুটন্ত তেলের ওপর পড়ে যান। এতে তাঁর ডান হাতের কনুই থেকে কবজি পর্যন্ত ঝলসে যায়। পিন্টু এগিয়ে এলে তাঁকেও মারধর করা হয়। খবর পেয়ে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন হোটেল ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। হোটেল বন্ধ করে গা ঢাকা দেন মালিক ও কর্মচারীরা।

হোটেলে বসে খাওয়া নিষিদ্ধ হওয়ায় তাঁরা বিরিয়ানির সঙ্গে মাংসের আলাদা ঝোল চান। কিন্তু হোটেলের কর্মচারীকে স্পর্শ করায় তাঁরা ঝোল দিতে রাজি হননি।

এ ঘটনায় গত শনিবার বগুড়া প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলনের (বিডিইআরএম) পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে এই ঘটনার বিচার দাবির পাশাপাশি স্থানীয় খাবারের হোটেলগুলোয় হরিজনসহ দলিত সম্প্রদায়ের লোকজনের খাওয়ার ক্ষেত্রে যে অলিখিত ‘নিষেধাজ্ঞা’ রয়েছে, তা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, গতকাল মামলার পর রাতেই পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামি মাসুদ রানাকে নওগাঁ থেকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে মাসুদকে বগুড়া আদালতে পাঠানো হয়।