ভর্তি পরীক্ষার কক্ষ খুঁজতে তিন ক্লিকে সমাধান দেবে ‘এক্সাম হল ফাইন্ডার’

সংবাদ সম্মেলন করে ‘এক্সাম হল ফাইন্ডার’ অ্যাপের হালনাগাদ সংস্করণের উদ্বোধন করা হয়। বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে
ছবি: প্রথম আলো

১২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা। পরীক্ষার দিন অনেক পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবক অচেনা ক্যাম্পাসে সঠিক কক্ষ খুঁজে পেতে গিয়ে পড়ে যান দুশ্চিন্তায়। সেই ঝামেলা দূর করতে আবারও এগিয়ে এসেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বায়োইনফরমেটিকস বিভাগের একদল শিক্ষার্থী। তাঁদের উদ্ভাবিত ‘এক্সাম হল ফাইন্ডার’ নামের একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে মাত্র তিনটি ক্লিকেই পরীক্ষার্থীরা তাঁদের পরীক্ষার হলের অবস্থান জানতে পারবেন।

ওয়েবলিংক কিংবা কিউআর কোড স্ক্যান করে অ্যাপে প্রবেশ করা যাবে। এরপর পরীক্ষার্থীর রোল নম্বর ও কক্ষ নম্বর ইনপুট দিলেই জিপিএস এবং গুগল ম্যাপের সাহায্যে অ্যাপটি পরীক্ষার হলে পৌঁছানোর দিকনির্দেশনা দেবে।

বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অ্যাপটির হালনাগাদ সংস্করণের উদ্বোধন করা হয়। অ্যাপটি নিয়ে কাজ করেছেন বায়োইনফরমেটিকস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অনিক হাওলাদার, তৃতীয় বর্ষের মুহাম্মদ ইশমামুল হক ও দ্বিতীয় বর্ষের মো. আসিফুজ্জামান। আইসিটি সেল ও কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের সার্বিক সহযোগিতায় এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ম্যাথমেটিকস বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে অ্যাপটি হালনাগাদ করা হয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন মো. জয়নাল আবেদীন, কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক মো. আবদুল আওয়াল, একই বিভাগের অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক মো. রোস্তম আলী এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ম্যাথমেটিকস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেছবাহ উদ্দিন।

অনিক হাওলাদার বলেন, ‘আমরা আগেও এই অ্যাপটি তৈরি করে ভালো সাড়া পেয়েছিলাম। পরীক্ষার দিন অনেকেই কক্ষ খুঁজে না পেয়ে হতাশায় পড়ে যান। তাই নতুন কেন্দ্রগুলোর তথ্য ও বর্তমান পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজন অনুযায়ী অ্যাপটি আপডেট করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত অ্যাপটি শুধু বাকৃবি কেন্দ্রের জন্য কাজ করছে। তবে আমরা চাই, কৃষি গুচ্ছভুক্ত প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের মতো করে স্থানীয়ভাবে প্রতিনিধি নিয়োগ হোক। সবার সঙ্গে সমন্বয় করে ভবিষ্যতে অ্যাপটি গুচ্ছভুক্ত সব কেন্দ্রের জন্য উপযোগী করে তুলতে চাই।’

পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু স্থানে এই অ্যাপ সম্পর্কে লিফলেট ও ব্যানার রাখা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। ব্যানারে দেওয়া কিউআর কোড ব্যবহার করে সহজেই অ্যাপে প্রবেশ করা যাবে। অধ্যাপক রোস্তম আলী জানান, ভর্তি পরীক্ষার দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পক্ষ থেকে একটি সহযোগিতা বুথ খোলা থাকবে। সেখানে প্রবেশপত্রসংক্রান্ত বা টেকনিক্যাল জটিলতা সমাধানে তাৎক্ষণিক সহায়তা পাওয়া যাবে। অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা নিজেদের উদ্ভাবনী দক্ষতা দিয়ে যেভাবে প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে সমস্যার সমাধান দিচ্ছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এটি ভর্তিচ্ছুদের মানসিক চাপ অনেকটাই কমিয়ে দেবে।’

এর আগেও এই শিক্ষার্থীরা ‘অ্যাডমিশন রোডম্যাপ’ নামের আরেকটি অ্যাপ তৈরি করেছিলেন, যা নবীন শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপে নির্দেশনা দিয়ে সহজ করে তোলে। এবার ‘এক্সাম হল ফাইন্ডার’ অ্যাপের হালনাগাদ সংস্করণ প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে পরীক্ষার দিনটিকেও করে তুলবে আরও বেশি সহজ।