
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে অস্ত্র রাখার অভিযোগে আজীবন বহিষ্কারাদেশ পাওয়া এক শিক্ষার্থীর সাজা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল করেছেন সহপাঠীরা। আজ মঙ্গলবার বেলা একটায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করেন।
এরপর সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল সহ-উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে এ বিষয়ে দাবি জানায়। এর আগে একই দাবিতে দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে একটি মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর সিন্ডিকেটের ২৩৭তম সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, হলের কক্ষে অস্ত্র ও মাদক রাখার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ জনকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়। এর মধ্যে মামুন মিয়া নামে এক শিক্ষার্থী আছেন। তিনি বর্তমানে লোকপ্রশাসন বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী। তিনি শাহপরান হলে থাকতেন। তাঁর সহপাঠীদের দাবি, মামুন মিয়া জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের আগেই হল ছেড়ে মেসে ওঠেন। আন্দোলনেও সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। পরে কক্ষে অস্ত্র পেলে সেই দায়ভার মামুনের নয়।
বিক্ষোভের সময় শিক্ষার্থীরা ‘মামুনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করো, করতে হবে’, ‘বহিষ্কারাদেশ, মানি না মানব না’, ‘সাস্টিয়ান সাস্টিয়ান, এক হও লড়াই করো’—ইত্যাদি স্লোগান দেন।
মানববন্ধনে লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুস সবুর বলেন, ‘মামুন ভাইকে বহিষ্কার করা অযৌক্তিক। আমরা অপরাধীদের পক্ষ নিচ্ছি না, তবে যিনি নির্দোষ, তাঁকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা অন্যায়। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া নির্দোষ মামুন ভাইয়ের জন্যই আমরা দাঁড়িয়েছি। সিন্ডিকেটে বিষয়টি উত্থাপন করে দ্রুতই মামুন ভাইয়ের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হোক।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য মো. সাজেদুল করিম বলেন, যারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করছে, তারা আপিল করতে পারে। আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি পুনরায় তদন্ত করা হবে। যদি তারা নির্দোষ প্রমাণিত হয়, তাহলে সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হব।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা, হলের কক্ষে অস্ত্র ও মাদক রাখার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ১৯ নেতা–কর্মীকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। একই অভিযোগে ৮ শিক্ষার্থীকে চার সেমিস্টার, ১ জনকে তিন সেমিস্টার, ১১ জনকে দুই সেমিস্টার, ১৫ জনকে সাময়িক বহিষ্কার এবং ৮ জনকে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বহিষ্কারাদেশ পাওয়া শিক্ষার্থীদের আপিল পর্যালোচনার জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।