Thank you for trying Sticky AMP!!

সমাজকল্যাণমন্ত্রীর বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ, তবে সৎভাইয়ের বকেয়া এখনো সোয়া ৭ লাখ

সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ

সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান আহমেদ এবং তাঁর ছেলে ও প্রয়াত বাবার নামে চালু থাকা বৈদ্যুতিক সংযোগের বিপরীতে মোট ১ লাখ ৭১ হাজার ৫৩৬ টাকার বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হয়েছে। তবে মন্ত্রীর সৎভাই মো. শামসুজ্জামান আহমেদের তিন বছরের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল সোয়া ৭ লাখ টাকা এখনো পরিশোধ করা হয়নি।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অনলাইন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নেসকোর অনুকূলে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর বাড়ির বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হয়। সমাজকল্যাণমন্ত্রীর ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুজ্জামান আহমেদ, তাঁর ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হোসেন ও কালীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড বাজারের আল আমিন টেলিকমের স্বত্বাধিকারী আল আমিন হোসেন বিল পরিশোধের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

Also Read: সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ৯ লাখ টাকা

আল আমিন হোসেন আজ শুক্রবার দুপুরে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, তাঁর ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদ ও মন্ত্রীর প্রয়াত বাবা করিম উদ্দিন আহমেদের নামে চালু থাকা চারটি বৈদ্যুতিক সংযোগের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল ১ লাখ ৭১ হাজার ৫৩৬ টাকা নেসকোকে বিকাশ, রকেট, নগদ ও জিপের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে। গতকাল বিকেল থেকে রাতের মধ্যে বিল পরিশোধ করা হয়।

সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, তাঁর ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদ, সৎভাই শামসুজ্জামান এবং প্রয়াত বাবা ও সাবেক সংসদ সদস্য করিম উদ্দিন আহমেদের গ্রাহক নম্বর ও মিটার নম্বর প্রথম আলোর কাছে আছে। নেসকোর ওয়েবসাইটে ঢুকে চারজনের বিদ্যুতের বকেয়া বিলসংক্রান্ত তথ্য–উপাত্ত পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে তাঁদের মোট বকেয়া বিদ্যুৎ বিল ছিল ৮ লাখ ৯৬ হাজার ৬৮০ টাকা। আগের কয়েক মাসের বকেয়াসহ ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত এসব বিল বকেয়া হয়। এ নিয়ে গত বুধবার প্রথম আলো অনলাইনে এবং বৃহস্পতিবার প্রথম আলোর শেষের পাতায় ‘মন্ত্রীর বাড়ির বিদ্যুৎ বিল বকেয়া’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

Also Read: ছাত্রলীগের হাতে লাঞ্ছিত প্রকৌশলীই বরখাস্ত, নেসকোর অভিযোগে নাম নেই কারও

মন্ত্রীর নামে আবাসিক ও সেচ মিটারের বিপরীতে নেসকোর বকেয়া বিলের পরিমাণ ছিল ৭২ হাজার ৯৬৪ টাকা। মন্ত্রীর ছেলে রাকিবুজ্জামানের নামে থাকা মিটারের বিপরীতে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত বকেয়া দাঁড়ায় ৭৯ হাজার ৯৯৫ টাকা এবং মন্ত্রীর প্রয়াত বাবা করিম উদ্দিন আহমেদের নামে চালু থাকা মিটারটির বিপরীতে মোট বকেয়া বিলের পরিমাণ ছিল ১৮ হাজার ৫৭৭ টাকা। গতকাল রাতে অনলাইন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তাঁদের বকেয়া মোট ১ লাখ ৭১ হাজার ৫৩৬ টাকা নেসকোর অনুকূলে পরিশোধ করা হয়েছে।

সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ বিল বকেয়া আছে মন্ত্রীর সৎভাই শামসুজ্জামান আহমেদের নামে। তাঁর নামে থাকা মিটারটির বিপরীতে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসের আগের কয়েক মাসসহ মোট বকেয়া ছিল ৫৯ হাজার ৭০৬ টাকা। চলতি বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ২০ হাজার ১৩৩ টাকা। তাঁর নামে নেসকোর আরেকটি মিটার আছে। সেচসংযোগের জন্য নেওয়া ওই মিটারের বিপরীতে বকেয়া বিলের পরিমাণ ১ লাখ ৫ হাজার ১১ টাকা। বিল না পেয়ে মিটারটির সংযোগ অস্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন করা আছে। কিন্তু বকেয়া আদায় হয়নি। শামসুজ্জামানের নামে দুটি মিটারের বিপরীতে ৭ লাখ ২৫ হাজার ১৪৪ টাকা বকেয়া রয়েছে। এখনো সেই বিল পরিশোধ করা হয়নি।

Also Read: ‘তোকে এখানে মার্ডার করলে তোর কোন বাপ বাঁচাতে আসবে’

বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের বিষয়ে জানতে শামসুজ্জামান আহমেদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

নেসকোর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে তাঁদের কার্যালয় থেকে হিসাবগুলোর বিপরীতে বকেয়া বিদ্যুৎ বিলসংক্রান্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করে নিয়ে যাওয়া হয়। সংযোগ বিচ্ছিন্ন বা আইনগত পদক্ষেপ না নেওয়া হলেও বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে মৌখিকভাবে তাঁদের অনুরোধ করা হয়েছে। এরপর গতকাল রাতে সমাজকল্যাণমন্ত্রী, তাঁর ছেলে ও প্রয়াত বাবার নামে থাকা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হয়।