
পঞ্চগড়ে গ্রামবাসীর হাতে ধরা পড়ার চার দিনের মাথায় নীলগাইটিকে কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে পঞ্চগড় বন বিভাগ কার্যালয় থেকে নীলগাইটিকে একটি কাঠের খাঁচায় ভরে ট্রাকে করে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেন বনকর্মীরা।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নীলগাইটিকে নিতে ডুলাহাজরা সাফারি পার্কের ওয়াইল্ড লাইফ স্কাউট মো. সাইফুর রহমানের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল পঞ্চগড় বন বিভাগ কার্যালয়ে আসে। সঙ্গে করে নিয়ে আসে ট্রাক ও কাঠের খাঁচা। চিকিৎসাধীন স্ত্রী নীলগাইটিকে কক্সবাজারের ডুলাহাজরা সাফারি পার্কে অন্তত ২১ দিন কোয়ারেন্টিনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কক্সবাজারের ডুলাহাজরা সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মঞ্জুরুল আলম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘নীলগাইটিকে নিতে যাওয়া আমাদের টিম প্রাণীটিকে নিয়ে ইতিমধ্যে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। নীলগাইটি অসুস্থ হওয়ায় ডুলাহাজরা সাফারি পার্কে এনে কোয়ারেন্টিনের রেখে চিকিৎসা দেওয়া হবে। সুস্থ হওয়ার পর এখানে থাকা অপর দুটি নীলগাইয়ের সঙ্গে বিচরণ করতে দেওয়া হবে।’
এর আগে গত রোববার দুপুরের দিকে পঞ্চগড় সদর উপজেলার গরিনাবাড়ি ইউনিয়নের সরকারপাড়া এলাকায় একটি ভুট্টাখেতে ছোটাছুটি করছিল নীলগাইটি। প্রথমে এটিকে কেউ হরিণ, আবার কেউ ঘোড়া ভেবে তাড়া করা শুরু করেন। ধীরে ধীরে উৎসুক লোকজন বাড়তে থাকলে শতাধিক মানুষ প্রাণীটির পেছনে ছুটতে থাকেন। বেশ কিছুক্ষণ তাড়া করে ধরে ফেলেন স্থানীয় মানুষেরা। খবর পেয়ে বন বিভাগের কর্মীরা সেখানে গিয়ে প্রাণীটিকে উদ্ধার করে নীলগাই হিসেবে শনাক্ত করেন। পরে ভ্যানে করে নীলগাইটিকে বন বিভাগ কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।
নীলগাইটি সীমান্ত পেরিয়ে ভারত থেকে এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কাঁটাতারের বেড়া পার হতে গিয়ে প্রাণীটি পা, মুখ, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছে।
পঞ্চগড় সামাজিক বনায়ন ও নার্সারি প্রশিক্ষণকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হরিপদ দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, নীলগাইটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত থাকায় চার দিন ধরে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে চিকিৎসা দেওয়ার পর উদ্ধারের দিনের চেয়ে প্রাণীটির কিছুটা শারীরিক উন্নতি হয়েছে।
এর আগে গত ৯ এপ্রিল পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা পূর্ণ জয়ধরভাঙ্গা এলাকায় তাড়া করে আরেকটি স্ত্রী নীলগাই ধরেছিলেন স্থানীয় মানুষেরা। পরে বিজিবির সহায়তা বন বিভাগের কর্মীরা আহত অবস্থায় নীলগাইটিকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় বন বিভাগ কার্যালয়ে আসেন। পরে বন বিভাগের স্টাফ কোয়ার্টারের একটি কক্ষে রেখে নীলগাইটিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে ১২ এপ্রিল নীলগাইটিকে ট্রাকে করে কক্সবাজারের ডুলাহাজরা সাফারি পার্কে পাঠানো হয়। ওই নীলগাইটি নেওয়ার পথে একই ট্রাকে গাজীপুরের সাফারি পার্ক থেকে আরেকটি পুরুষ নীলগাই নিয়ে কক্সবাজারের ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে নিয়ে যান ডুলাহাজরা সাফারি পার্কের কর্মীরা।