
পঞ্চগড়ে ঘন কুয়াশার দাপট আর উত্তরের হিমেল বাতাসে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও অনুভূত হচ্ছে কনকনে শীত। এমন অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ। আজ বুধবার সকাল ৯টার দিকে তেঁতুলিয়ায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, এদিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ এবং বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার। রাতভর ঝরতে থাকা ঘন কুয়াশা আর উত্তরের ঝিরিঝিরি বাতাসের দাপট ছিল বেলা ১১টা পর্যন্ত। এ সময়ে সূর্যের দেখা না মেলায় শীতের তীব্রতা তেমন কমেনি।
আজ সকালে পঞ্চগড় শহরের মিঠাপুকুর এলাকায় কথা হয় ভ্যানচালক এনামুল হকের (৪২) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাতাসখান শিলশিল করে নাগেছে, পানির (বৃষ্টির) মতো কুয়াশা পচ্ছে, মাথার চুল-চোখের ভুরু আর কাপড়লা ভিজে গেইছে, ঠান্ডাত হাত-পাও লা জড়ো হয় আচ্চে।’
এর আগে ১১ ডিসেম্বর তেঁতুলিয়ায় সারা দেশের এবং চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। ওই দিন থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত তেঁতুলিয়ায় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বিরাজ করায় এ জনপদে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল। তবে কুয়াশা কম থাকায় প্রায় প্রতিদিনই সকাল সকাল ঝলমলে রোদের দেখা মিলছিল, ফলে দিনে শীত তুলনামূলক কম অনুভূত হয়েছিল।
আজ সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কুয়াশায় ঢেকে গেছে চারদিক। রতভর টিপটিপ বৃষ্টির মতো ঝরতে থাকা কুয়াশায় ভিজে গেছে পিচঢালা পথ। বইছে উত্তরের ঝিরিঝিরি হিমেল বাতাস। গ্রামের কোথাও কোথাও খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। হাড়কাঁপানো শীতকে উপেক্ষা করে দরকারি কাজে বের হয়েছেন সাধারণ মানুষ। কুয়াশার কারণে মহাসড়কে যানবাহনগুলো চলাচল করছে হেডলাইট জ্বালিয়ে।
সকাল সাড়ে আটটার দিকে সদর উপজেলার শিংপাড়া এলাকায় ময়নুল ইসলাম (৪৮) নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘ঠান্ডার তানে (জন্য) কাজোত বাইর হইতে খুপে কষ্ট, ঠান্ডাতে খালি কাপাছে, কুয়াশাতে কাপড়চোপড় ভিজে যাছে, পথঘাট কিচ্ছু দেখা যায়না।’
জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে এলাকাটির ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায়। তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তেঁতুলিয়ায় বর্তমানে শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও ঘন কুয়াশা আর উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসা হিম বাতাস মানুষকে কাবু করে দিয়েছে। আকাশে হালকা মেঘ আর ঘন কুয়াশার কারণে ভূপৃষ্ঠে সূর্যের তীব্রতা ছড়ায় না। এতে দিনের বেলাতেও শীত অনুভূত হচ্ছে এবং দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাচ্ছে।