
মুন্সিগঞ্জ–৩ (সদর–গজারিয়া) আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে ঢাকা–মুন্সিগঞ্জ সড়কের মুক্তারপুর সেতুর ওপর আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন দলের এক পক্ষের নেতা–কর্মীরা।
আজ শুক্রবার বিকেলে দুই ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করেন এই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব মো. মহিউদ্দিন আহমেদের সমর্থকেরা। অবরোধের কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ৩৬টি আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। মুন্সিগঞ্জ–৩ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় বিএনপির সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক মো. কামরুজ্জামানকে। নাম ঘোষণার পর মহিউদ্দিনের সমর্থকেরা সন্ধ্যায় জেলার দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, আজ জুমার নামাজের পর থেকে মুক্তারপুর সেতু এলাকায় জড়ো হতে থাকেন মহিউদ্দিনের সমর্থকেরা। বেলা তিনটার দিকে সেতুর পূর্ব পাশ থেকে পশ্চিম পাশ পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা ছড়িয়ে পড়েন। সেতুর অন্তত ছয়টি স্থানে আগুন জ্বালান বিক্ষোভকারীরা। এতে সেতু দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, গত ১৭ বছর এ আসনে আন্দোলন–সংগ্রাম সংগঠিত করে রেখেছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল হাই ও তাঁর ছোট ভাই জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব মো. মহিউদ্দিন আহমেদ। সে সময় কামরুজ্জামান মাঠে ছিলেন না। এখন তিনি মনোনয়ন পাওয়ায় এই আসনের নেতা–কর্মীরা অসন্তুষ্ট। দ্রুত মনোনয়ন পরিবর্তন না হলে এই আসনে বিএনপির মধ্যে বিভক্তি দেখা দেবে। আন্দোলন–সংগ্রাম পুরো মুন্সিগঞ্জে ছড়িয়ে পড়বে।
সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দাবি একটাই। এই আসনে প্রার্থী পরিবর্তন করতে হবে। যে পর্যন্ত কামরুজ্জামানকে পরিবর্তন করা না হবে, সেই পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন–সংগ্রাম চলবে।’
শহর বিএনপির সদস্যসচিব মাহবুব আলম বলেন, মহিউদ্দিন এই আসনের সাধারণ মানুষ নিয়ে আন্দোলন–সংগ্রাম করেছেন। তাঁকে মনোনয়নবঞ্চিত করার বিষয়টি এই আসনের মানুষ মেনে নিতে পারেননি। তাঁরা স্বপ্রণোদিত হয়ে একের পর এক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। আজ মুক্তারপুর সেতু অবরোধ করা হয়েছে। প্রার্থী পরিবর্তন না হলে আগামী দিনে এর চেয়েও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
মুক্তারপুর সেতু অবরোধ করায় বেলা তিনটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এই সেতুর ওপর যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। পরে বিকেল সাড়ে পাঁচটার পর যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। অবরোধের কারণে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হয়।