বিএনপি নেতার করা চাঁদাবাজির মামলা থেকে নাম প্রত্যাহারে এনসিপির আলটিমেটাম

খাগড়াছড়িতে চাঁদাবাজির অভিযোগে হওয়া এক মামলা থেকে দুই নেতা ও এক নেতার বাবার নাম প্রত্যাহার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে এনসিপি। আজ দুপুরে জেলার প্রেস ক্লাবে
ছবি: প্রথম আলো

খাগড়াছড়িতে চাঁদাবাজির অভিযোগে হওয়া এক মামলা থেকে দুই নেতা ও এক নেতার বাবার নাম প্রত্যাহার চেয়েছে জেলার জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলার প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা। তাঁদের অভিযোগ, বিএনপি নেতার প্ররোচনায় পুলিশ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই মামলা নিয়েছে। এ সময় তাঁরা মামলা থেকে তিনজনের নাম প্রত্যাহারে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন।

এর আগে রোববার চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে খাগড়াছড়ি থানায় মামলা করেন খাগড়াছড়ি পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. কুদ্দুস। এতে সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ও খাগড়াছড়ি আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করা হয়। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বেলা সাড়ে তিনটার দিকে চাঁদার জন্য তাঁর বাড়িতে হামলা চালিয়ে মারধর, ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।

এই মামলায় এনসিপির দুই নেতার নাম উল্লেখ রয়েছে। তাঁরা হলেন এনসিপির জেলা সংগঠক শাহ নেওয়াজ রহমান ও বেলাল হোসেন। তাঁরা ১৪ ও ১৬ নম্বর আসামি। এ ছাড়া মো. বেলাল হোসেনের বাবা শফিকুল ইসলাম নামও এতে উল্লেখ রয়েছে। তিনি এই মামলার ১৫ নম্বর আসামি।

মামলার এজাহারে শাহ নেওয়াজকে খাগড়াছড়ি সদর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য, শফিকুল ইসলামকে পৌর আওয়ামী লীগের সহদপ্তর সম্পাদক ও বেলাল হোসেনকে পৌর যুবলীগের কর্মী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির খাগড়াছড়ি শাখার সংগঠক শাহ নেওয়াজ রহমান উপস্থিত ছিলেন। তিনিই সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তাঁর দাবি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিএনপি নেতাদের প্ররোচনায় পুলিশ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এনসিপি নেতাদের নামে ভিত্তিহীন মামলা নিয়েছে। এসব মামলার কোনো প্রমাণ নেই, ঘটনাগুলোও মনগড়া। এনসিপির রাজনীতি করা সত্ত্বেও তাঁদের আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, এ মামলার বাদীর সঙ্গে তাঁদের কোনো সম্পর্ক নেই। মামলা হতে পারে এমন কোনো ঘটনার সঙ্গেও তাঁরা জড়িত নন। রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশ্যে তাঁদের ওপর এই অন্যায় চাপানো হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় এই মামলা থেকে তাঁদের নাম প্রত্যাহার চান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির দক্ষিণ অঞ্চলের সংগঠক মনজিলা ঝুমা, বেলা হোসেন, আকলিমা আক্তার, সুইচিং মারমা, সুবোধ বিকাশ চাকমা, বিপ্লব ত্রিপুরা প্রমুখ।

তবে এনসিপি নেতাদের এই অভিযোগ অস্বীকার করেন খাগড়াছড়ি পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. কুদ্দুস। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনা সত্য বলেই মামলা করেছি। একসময় তাঁরা (এনসিপির নেতারা) আওয়ামী লীগ করতেন। এখন এনসিপিতে যোগ দিয়ে নিজেকে নিরপরাধ দেখানোর চেষ্টা করছেন।’