
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় গত জুলাই মাসে টিসিবির প্রায় ৭৮ টন চাল বিতরণ না করে আত্মসাৎ চেষ্টার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার দায়ী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ঋতু ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী ও ওএমএস ডিলার হোসেনিয়া কান্তার ডিলারশিপ বাতিল করেছে জেলা প্রশাসন। একই সঙ্গে রাতে উপজেলার বিনোদপুর বাজারের একটি গুদাম থেকে ৭৭ দশমিক ৮ টন চাল উদ্ধার করা হয়েছে।
টিসিবির চাল আত্মসাতের অভিযোগ নিয়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর ‘৭৭ মেট্রিক টন চাল তুলে নিয়েছেন ডিলার, উপকারভোগীরা জানেন বরাদ্দ হয়নি’ শিরোনামে প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর ঘটনার তদন্তে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে উপজেলা প্রশাসন। প্রাথমিক তদন্তে বরাদ্দ হওয়া চাল উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হয়নি বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বাণিজ্য শাখার সহকারী কমিশনার আমিনুল ইসলামের সই করা চিঠিতে হোসেনিয়া কান্তার ডিলারশিপ বাতিল করা হয়। একই সঙ্গে ওই চাল উদ্ধারে মহম্মদপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এমন প্রেক্ষাপটে গতকাল রাতে উপজেলার বিনোদপুর বাজারের একটি গুদামে অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মজনুর রহমান বলেন, ডিলার (পরিবেশক) নিজেই বিনোদপুর বাজারের একটি গুদামে চাল রেখেছিলেন। সেখান থেকেই চাল উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ঘটনাস্থলে অভিযুক্ত ডিলার বা গুদামের মালিককে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে পরিবেশক হোসেনিয়া কান্তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও তাঁর সাড়া পাওয়া যায়নি।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘একা ডিলারের পক্ষে এত বড় অনিয়ম করা সম্ভব নয়। এর সঙ্গে খাদ্য অফিস, টিসিবির ডিলার ছাড়া অনেকেই জড়িত থাকতে পারেন। বিশেষ করে টিসিবির কার্যক্রম তদারকির জন্য প্রতি ইউনিয়নে একজন করে ট্যাগ অফিসার আছেন। তাঁদের চোখ এড়িয়ে ৭৮ টন চাল কীভাবে আত্মসাৎ হলো? আবার প্রায় দুই মাস পরে উদ্ধার করা হলো?’
এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুস সোবাহান বলেন, ডিলার ছাড়াও এ ঘটনায় অন্যদের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে—এমন প্রমাণ মিলেছে। তবে সেগুলো এখনই প্রকাশ করা সম্ভব নয়। প্রশাসনের কাছে বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মাগুরার জেলা প্রশাসন মো. অহিদুল ইসলাম।