
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজতবা আলী হলে এক শিক্ষার্থীকে র্যাগ দেওয়ার ঘটনায় পাঁচ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একই সঙ্গে ওই পাঁচ শিক্ষার্থীর হলের আসন বাতিলের প্রক্রিয়া চলছে। গতকাল বুধবার রাতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী।
বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীরা সবাই ব্যবসায় প্রশাসন (বিবিএ) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ওই শিক্ষার্থীদের বিস্তারিত পরিচয় প্রকাশ করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের চার-পাঁচজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে র্যাগ দেওয়ার অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের এক ছাত্র ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধানের কাছে মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পরে অভিযোগটি রেজিস্ট্রার হয়ে উপাচার্যের কাছে দেওয়া হয়েছে। এরপর এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি গতকাল ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছেন। পরে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের পাঁচজনকে শনাক্ত করেছেন। প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত পাঁচজনকে সমায়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁদের হলের আসন বাতিলের প্রক্রিয়া চলছে।
এর আগে র্যাগের ঘটনা তদন্তে গতকাল বিকেলেই পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. খায়রুল ইসলামকে প্রধান করা হয়েছে। অন্য সদস্যরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধান মাজহারুল হাসান মজুমদার, সৈয়দ মুজতবা আলী হলের প্রভোস্ট আবু সায়েদ আরফিন খান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট মনিরুজ্জামান খান ও সহকারী প্রক্টর মিজানুর রহমান।
কমিটি ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করলেও বিস্তারিত পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির সদস্য ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধান মাজহারুল হাসান মজুমদার। তিনি বলেন, ‘তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে। আমরা সময়মতো তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করব।’
এদিকে বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীদের বিস্তারিত পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজ দুপুরে এসব বিষয় নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমে কথা বলা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় ও মুজতবা আলী হলের একাধিক সূত্র জানায়, ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই হলের ১১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে একই বিভাগের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে র্যাগ দেন। এরপর ভয়ে ওই শিক্ষার্থী বাড়িতে চলে যান। বাড়ি থেকে তিনি তাঁর বিভাগীয় প্রধানের মুঠোফোনে খুদেবার্তা পাঠিয়ে বিষয়টি জানান।