আলীপুর মৎস্যবন্দরের বিএফডিসি মার্কেটে বিক্রির জন্য তোলা পাখি মাছ। আজ সোমবার বিকেলে
আলীপুর মৎস্যবন্দরের বিএফডিসি মার্কেটে বিক্রির জন্য তোলা পাখি মাছ। আজ সোমবার বিকেলে

কুয়াকাটাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে জেলের জালে ধরা পড়ল তিনটি পাখি মাছ

পটুয়াখালীর কুয়াকাটাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে আবু সালেহ মাঝি নামের এক জেলের জালে ধরা পড়ল তিনটি পাখি মাছ। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এটি সেইল ফিস বা গোলপাতা মাছ নামেও পরিচিত।

আজ সোমবার বিকেলে মাছ তিনটি আলীপুর মৎস্য বন্দরের বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) মার্কেটে বিক্রির জন্য নিয়ে এলে দেখার জন্য মানুষের ভিড় জমে যায়।

বাজারে এসব মাছের চাহিদা কম থাকায় মাছ তিনটি নিলাম ডাকের মাধ্যমে ২৩ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। সাফা ফিসের স্বত্বাধিকারী চয়ন মিয়া ৩৫ কেজি ওজনের একটি মাছ ৪০০ টাকা কেজি দরে ১৪ হাজার টাকায় কিনে নেন। অপর ২টি মাছ স্থানীয় ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন ৯ হাজার টাকায় কেনেন।

সেইল ফিস (Sailfish) হলো একটি সামুদ্রিক মাছ, যা দেখতে অনেকটা পালতোলা নৌকার মতো। এটি Istiophoridae পরিবারের অন্তর্গত এবং এর বৈজ্ঞানিক নাম Istiophorus platypterus। এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো পিঠের ওপরের দিকে থাকে বিশাল পাখনার মতো অংশ, যা দেখলে মাছটিকে পালতোলা নৌকার মতো মনে হয়। এটি বিশ্বের দ্রুততম মাছগুলোর মধ্যে একটি, যা প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১১০ কিলোমিটার বেগে সাঁতার কাটতে পারে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. সালাউদ্দিন বলেন, এসব মাছ বর্ষার সময় বেশি ধরা পড়ে। এলাকায় এসব মাছের চাহিদা কম। তবে কখনো কখনো ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। মাছটি অপরিচিত হওয়ায় এলাকার অনেকেই খেতে চান না। তবে কক্সবাজার ও ঢাকায় এসব মাছের বেশ চাহিদা রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার আবু সালেহ মাঝি ২৩ জেলেসহ এফবি আল্লাহর দোয়া নামের একটি ট্রলার নিয়ে কুয়াকাটাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে যান। এরপর সাগরে জাল ফেললে ইলিশ মাছের সঙ্গে এ মাছ তিনটি ধরা পড়ে। জেলে আবু সালেহ মাঝি বলেন, ‘গত পরশু কুয়াকাটাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের প্রায় ১৭০ কিলোমিটার দূরে জাল ফালাই। এ সময় ইলিশ মাছের সঙ্গে মাছগুলো উইঠ্যা আসে।’

সাফা ফিসের স্বত্বাধিকার চয়ন মিয়া বলেন, সচরাচর এসব মাছের দেখা মেলে না। এলাকায় চাহিদা কম হওয়ায় ঢাকায় বিক্রির জন্য পাঠানো হবে। তবে মাছটি অনেক সুস্বাদু, দামও কম।

উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা প্রথম আলোকে বলেন, পাখি মাছ গভীর সমুদ্রে থাকে। পরিবেশ ও ঘন ঘন সমুদ্রের আবহাওয়া খারাপ থাকায় মাছগুলো তীরে আসে না, যার কারণে কম ধরা পড়ছে। আগের চেয়ে বঙ্গোপসাগরে এসব মাছ বেড়েছে। তবে এর তা খুব বেশি নয়।