ঢাকার সাভারে গেন্ডা বালুর মাঠে শ্রমিক সমাবেশে বক্তব্য দেন শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। শনিবার বেলা তিনটার দিকে
ঢাকার সাভারে গেন্ডা বালুর মাঠে শ্রমিক সমাবেশে বক্তব্য দেন শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। শনিবার বেলা তিনটার দিকে

আমরা মালিক-শ্রমিক উভয়ের পক্ষে কাজ করতে চাই: শ্রম উপদেষ্টা

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘আগে আপনারা কোনো কথা বলতে পারেননি, রাস্তায় নামতে পারেননি। আপনার গুম হয়েছেন, খুন হয়েছেন এমনকি লাঠিপেটার শিকার হয়েছেন। কখনো শুনিনি ক্ষতিগ্রস্ত কাউকে কমপেনসেশন (ক্ষতিপূরণ) দেওয়া হয়েছে। সবাই মালিকের পক্ষে কাজ করেছে। কিন্তু আমরা মালিক-শ্রমিক উভয়ের পক্ষে কাজ করতে চাই। শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি উত্থাপনের জন্য মন্ত্রণালয়ের দরজা সব সময় খোলা আছে। এই সরকার শ্রমিকবান্ধব। সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি প্রয়োজন হলে শ্রমিকদের ন্যূনতম চাহিদা পূরণের জন্য রাস্তায় নামতেও রাজি আছি।’

শনিবার বেলা তিনটায় ঢাকার অদূরে সাভারে গেন্ডা বালুর মাঠে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা-২০২৫’ উপলক্ষে শহীদদের স্মরণে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এ সমাবেশের আয়োজন করে। মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি।

এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আজকে যাদের স্মরণে আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি, ইয়াং বাংলাদেশি নাগরিক, স্টুডেন্ট, শ্রমিক এবং অন্যান্যরা যারা রক্ত দিয়েছিল, একটা সুষম সামঞ্জস্যপূর্ণ সোসাইটি গড়ে তোলার জন্য। এটাই করার চেষ্টা করছি। শ্রমিকদের ন্যায্যমূল্য, বেতন দেওয়া থেকে শুরু করে সবকিছুর পেছনে শ্রম মন্ত্রণালয় অক্লান্ত পরিশ্রম করছে।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশ লেবার অ্যাক্টকে যুগোপযোগী করার চেষ্টা চলছে। ট্রেড ইউনিয়নের বিষয়টি অত্যন্ত শিথিল করা হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়ন এবং কোনো শ্রমিককে কোনো মালিক কালোতালিকাভুক্ত করতে পারবে না, এটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটা করার ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের কাছে আমরা এই ক্ষমতা রাখতে চাচ্ছি। ট্রেড ইউনিয়নের কারও নাম প্রকাশ করতে দেওয়া হচ্ছে না এবং ইনসপেকশনও হবে না। তবে যাদের বিষয়ে কোনো সন্দেহ থাকবে, তাদের ক্ষেত্রে ভিন্ন কথা। প্রতিটি কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার রয়েছে। ট্রেড ইউনিয়ন করার পর নির্বাচনের মাধ্যমে সিবিএ নির্ধারিত হবে। তারাই সরকারের সাথে শ্রমিকদের পক্ষে যেসব দাবিদাওয়া আছে, সেগুলো উত্থাপন করবে এবং তারাই হবে বার্গেনিং এজেন্ট।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তরসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া সমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শ্রমিক শাখার প্রতিনিধি, বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকনেতা ও শ্রমিকেরা উপস্থিত ছিলেন।