আড়িয়াল খাঁ নদের তলদেশ থেকে বিশালাকৃতির এই নোঙর উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ এলাকায়
আড়িয়াল খাঁ নদের তলদেশ থেকে বিশালাকৃতির এই নোঙর উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ এলাকায়

আড়িয়াল খাঁ নদের তলদেশে মিলল বিশালাকৃতির নোঙর

বরিশালের আড়িয়াল খাঁ নদের তলদেশ থেকে বিশালাকৃতির একটি নোঙর উদ্ধার করা হয়েছে। নোঙরটি কীভাবে এখানে এল, তা নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে দেখা দিয়েছে কৌতূহল। স্থানীয় এক জেলে নদে মাছ ধরার জন্য জাল ফেলার পর প্রথম এই নোঙরের খোঁজ পান।

গতকাল বুধবার দুপুরে বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের হবিনগর গ্রামের জেলেরা দুই দিনের প্রচেষ্টায় ডুবুরিদের সহায়তায় নদের তলদেশ থেকে নোঙরটি ডাঙায় তুলতে সক্ষম হন।

হবিনগর গ্রামের স্থানীয় জেলে জসিম উদ্দিন জানান, গত সোমবার দুপুরে তিনি পাঙাশ মাছ ধরার জন্য নদে জাল ফেলেছিলেন। কিছুক্ষণ পর জালটি কোনো কিছুর সঙ্গে আটকে যায়। অনেক চেষ্টা করেও জাল তুলতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘প্রথম মনে অইছেলে, কোনো গাছের গুঁড়ির লগে জালে প্যাঁচ লাগছে। অনেক সোময় ধইর‌্যা চেষ্টা করনের পর দেহি, বিষয়টা অন্য রহম কিছু।’

পরে জসিম উদ্দিন বিষয়টি অন্য জেলেদের জানান। এরপর গত মঙ্গলবার থেকে স্থানীয় জেলেরা ডুবুরি ডেকে এনে নদে নামেন। মাটি ও পলি সরাতে সরাতে ধীরে ধীরে দেখা মেলে লোহার তৈরি বিশাল এক নোঙরের। ৫০ থেকে ৬০ জন মানুষ একসঙ্গে দুই দিন ধরে কাজ করে গতকাল দুপুরে নোঙরটি নদ থেকে তোলেন। নোঙরটির সঙ্গে লোহার মোটা শিকলও পাওয়া গেছে।

স্থানীয় লোকজনের ধারণা, নোঙরটি অনেক পুরোনো। ব্রিটিশ বা পাকিস্তান আমলে এখানে বড় জাহাজ আসত। তখন হয়তো তেমন কোনো জাহাজ থেকে নোঙরটি নদে পড়ে গিয়েছিল। লম্বায় প্রায় সাত ফুট এই নোঙরের ওজন এখনো জানা যায়নি, তবে স্থানীয় লোকজন অনুমান করছেন, এটির ওজন দেড় থেকে দুই টনের কম নয়।

বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হাসান বলেন, ‘বস্তুটি রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসেবে বিবেচ্য। আমরা বিষয়টি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআইডব্লিউটিএ) জানিয়েছি। আমি নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করব। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

স্থানীয় প্রবীণ জেলে জামাল পঞ্চায়েত বলেন, তিনি ছোটবেলা থেকে এই নদে এমন কোনো বড় জাহাজ বা কার্গো আসতে দেখেননি। এত বড় নোঙর কীভাবে এল, এটাই এখন সবার প্রশ্ন।

বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, এ বিষয়ে তাঁরা এখনো কিছু জানেন না।