
নির্বিচার বালু উত্তোলনকারীদের হাত থেকে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ধলাই সেতু রক্ষায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। কর্মসূচি থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, অবাধে বালু উত্তোলনের কারণে সেতুটি ধ্বংস হলে স্থানীয় প্রশাসনকে আসামি করে মামলা করা হবে।
শনিবার বিকেলে পরিবেশবাদী সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) সিলেট শাখা এবং আন্তর্জাতিক পানি ও নদীবিষয়ক সংগঠন সুরমা রিভার ওয়াটারকিপারের উদ্যোগে এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদতীরবর্তী সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ধলাই সেতুর পূর্বপাড়ে এ কর্মসূচি হয়। এ সময় বালু লুটতরাজ বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে সতর্ক করে দেওয়া হয়। কর্মসূচিতে স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ক্লাব সেতু রক্ষার দাবিতে ব্যানার-ফ্যাস্টুনসহ কর্মসূচিতে অংশ নেয়।
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ এমদাদুল হকের সভাপতিত্বে সমাবেশে সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার আবদুল করিম (কিম) বক্তব্য দেন। বক্তব্যে তিনি বলেন, ধলাই নদের সঙ্গে বিগত এক বছর ধরে নজিরবিহীন অন্যায়-অনাচার চলছে। এখানে আইনকানুনের কোনো তোয়াক্কা নেই। বালু-পাথর লুট করতে করতে পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে নিজের পায়ে কুড়াল মেরে ধলাই সেতু ধ্বংসের আয়োজন চলছে। অবিলম্বে বালুখেকোদের হাত থেকে ধলাই সেতু রক্ষায় উদ্যোগ নেওয়া না হলে, সেতু ধ্বংসের জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করতে ব্যর্থতার জন্য আসামি করে মামলা করা হবে।
স্থানীয় স্কুলশিক্ষক নিজাম উদ্দিনের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে ধরা সিলেটের সংগঠক ও ভোলাগঞ্জের স্থানীয় বাসিন্দা ফয়জুর রহমান স্বাগত বক্তব্য দেন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ধরার সংগঠক ও আইনজীবী অরূপ শ্যাম বাপ্পী, সমাজসেবী সোহাগ তাজুল আমিন ও নাট্যকর্মী আহমেদ হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।
বক্তারা জানান, ২০০৫ সালে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৩৪ দশমিক ৩৫ মিটার দীর্ঘ ও ৯ দশমিক ৫ মিটার প্রস্থের ধলাই সেতু নির্মাণ করা হয়। ২০০৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তৎকালীন অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমান সেতুটি উদ্বোধন করেন। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সদরের সঙ্গে ভারত সীমান্তঘেঁষা তিনটি ইউনিয়নের প্রায় লাখো মানুষের সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করেছে ধলাই সেতু।
বক্তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট–পরবর্তী সময়ে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের শিথিলতায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদে শুরু হয় নির্বিচার বালু ও পাথর লুট। বালুখেকোরা প্রশাসনিক কোনো বাধা না পাওয়ায় এতই বেপরোয়া হয় যে ধলাই সেতুর নিচ থেকে বালু উত্তোলন করা শুরু করে। এতে সেতুটি ধ্বংসের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে।