নবজাতক বিক্রির টাকা ভাগাভাগি, দুই পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার
যশোরের চৌগাছা উপজেলায় পুলিশের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি নবজাতক বিক্রির টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে । মামলার ভয় দেখিয়ে পুলিশের ওই দুই কর্মকর্তা নবজাতক বিক্রির ৭০ হাজার টাকার মধ্যে ৩০ হাজার টাকা এবং স্থানীয় একটি পক্ষ আরও ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
অভিযুক্ত ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন চৌগাছা থানার উপপরিদর্শক শামীম হোসেন ও আশিক হোসেন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার তাঁদের প্রত্যাহার করে যশোর পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বেলাল হোসাইনের দাপ্তরিক মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। তবে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী পরিবার যে অভিযোগ করছে, তা মিথ্যা। তারপরও বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। টাকা লেনদেনের কোনো তথ্য প্রমাণিত হলে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যশোরের চৌগাছা উপজেলার এক গৃহবধূর স্বামী দুই বছর ধরে ভারতের কারাগারে আটক আছেন। এ অবস্থায় এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ওই গৃহবধূ। এর মধ্যে ওই গৃহবধূ অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। গত ২৫ সেপ্টেম্বর চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। ততক্ষণে বিষয়টি উভয়ের পরিবার জেনে যায়। ওই গৃহবধূ ও তাঁর প্রেমিক বিষয়টি মেনে নিলেও তাঁদের পরিবার বিষয়টি মানতে রাজি হয়নি। এ কারণে ২ অক্টোবর নবজাতককে পাশের টেঙ্গুরপুর গ্রামের মুকুল খান ও আশা খান দম্পতির কাছে ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয় তারা।
নবজাতক বিক্রির বিষয়টি চৌগাছা থানার এসআই শামীম জানতে পেরে মামলার ভয় দেখিয়ে ওই গৃহবধূ ও তাঁর প্রেমিকের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকার মধ্যে ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন।
নবজাতক বিক্রির বিষয়টি চৌগাছা থানার এসআই শামীম জানতে পেরে মামলার ভয় দেখিয়ে ওই গৃহবধূ ও তাঁর প্রেমিকের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকার মধ্যে ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন এসআই আশিক হোসেন। পুলিশের সোর্স (তথ্যদাতা) হিসেবে পরিচিত রকিসহ কয়েকজন মিলে আরও ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। বিষয়টি জানাজানি হলে মঙ্গলবার স্থানীয় ইউপি সদস্য মহিদুল ইসলাম ও এসআই শামীম মিলে ওই গৃহবধূকে তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে দেন।
ওই যুবক বলেন, ‘পুলিশের চাপের কারণেই শিশুটিকে বিক্রি করেছি। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে নবজাতক জন্মের খবর শুনে এসআই শামীম ৮০ হাজার টাকা দাবি করেন। প্রথম দফায় ৩০ হাজার টাকা নেন তিনি। পরে তিনি আরও ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন।’
টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে চৌগাছা থানার এসআই শামীম হোসেন বলেন, ‘আমি কারও কাছ থেকে কোনো টাকা নিইনি। তবে ঘটনাটি মীমাংসার জন্য আমি সেখানে গিয়েছিলাম। মুকুল খান আদালত থেকে কাগজপত্র করে নবজাতকটিকে দত্তক নিয়েছেন শুনেছি। এ ঘটনায় অভিযোগ তোলায় আমি ও এসআই আশিককে ক্লোজড করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন
-
কিডনি ব্যবসায়ীরা পার পাচ্ছেন দায়সারা তদন্তে
-
মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারে এশিয়ায় বেশি পিছিয়ে বাংলাদেশের নারীরা
-
বিদ্যালয়ের শৌচাগারে ৬ ঘণ্টা আটকে ছিল এক শিশু, পরে তালা ভেঙে উদ্ধার
-
পৃথিবীর কোন দেশে সেন্ট্রাল ব্যাংকে ঢুকতে পারছে অবাধে: ওবায়দুল কাদের
-
পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদীশাসনে হাজার কোটি টাকা বাড়তি চায় চীনা ঠিকাদার