জেলা বিএনপির সম্মেলন উপলক্ষে সাজিয়ে তোলা হয়েছে কিশোরগঞ্জ শহরের পুরোনো স্টেডিয়াম। গতকাল শুক্রবার বিকেলে
জেলা বিএনপির সম্মেলন উপলক্ষে সাজিয়ে তোলা হয়েছে কিশোরগঞ্জ শহরের পুরোনো স্টেডিয়াম। গতকাল শুক্রবার বিকেলে

৯ বছর পর কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন আজ, শীর্ষ দুই পদে লড়ছেন ৬ প্রার্থী

৯ বছর পর কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলন আজ শনিবার শহরের পুরোনো স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য মোট ছয়জন নেতা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১৩টি উপজেলা ও ৮ পৌর কমিটির ২ হাজার ৯০ জন কাউন্সিলরের ভোটের মাধ্যমে শীর্ষ দুটি পদে নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

সম্মেলন ঘিরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ কারা পাচ্ছেন, তা নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। শহরের স্টেশন রোডসহ বিভিন্ন এলাকা প্রার্থীদের ছবিসংবলিত ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুনে ভরে গেছে। দুই শর ওপরে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। স্টেডিয়ামে বিশাল মঞ্চের সঙ্গে নির্মাণ করা হয়েছে ৩০ হাজার বর্গফুটের অস্থায়ী ছাউনি। সম্মেলন ঘিরে দলের নেতা–কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ–উদ্দীপনা বিরাজ করছে।

বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, বেলা ১১টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম। প্রধান বক্তা হিসেবে থাকার কথা রয়েছে দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের। অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালে প্রিন্স, কোষাধ্যক্ষ এম রাশিদুজ্জামান মিল্লাত, সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ ওয়ারেছ আলী মামুন ও আরেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম।

জেলা বিএনপির সম্মেলন আয়োজনে সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে কিশোরগঞ্জ শহরের পুরোনো স্টেডিয়ামে

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে মো. শরীফুল আলমকে সভাপতি ও মাজহারুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা। ওই সময় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম উপস্থিত থাকলেও বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ হয়ে যায় সম্মেলন। পরে তিন সপ্তাহ পর কেন্দ্র থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়।

পরবর্তী সময়ে ১৫১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। এবার সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন জেলা বিএনপির বর্তমান সভাপতি মো. শরীফুল আলম। তাঁকে প্রতীক দেওয়া হয়েছে ‘আনারস’। তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির ময়মনসিংহ অঞ্চলের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বেও আছেন। তাঁর সঙ্গে ‘ছাতা’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান জেলা কমিটির সহসভাপতি রুহুল হোসাইন।

সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. মাজহারুল ইসলাম (রিকশা), কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল (ফুটবল), নিকলী উপজেলা বিএনপির সদস্য শফিকুল আলম রাজন (মাছ) ও নিকলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সাজ্জাদুল হক (গোলাপ ফুল)।
তবে এই সম্মেলনের তফসিলের পর প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়ার সময় দলীয় গঠনতন্ত্রের ‘এক নেতা এক পদ’ বিধান মানা হয়নি বলে কোনো কোনো প্রার্থীর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। বক্তৃতা, বিবৃতি ও সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের তাঁরা এসব অভিযোগ জানান।

সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন পর সম্মেলন হওয়ায় নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত। তাঁদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে কাউন্সিলররা তাঁদের নেতা নির্বাচন করবেন।

জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম বলেন, ‘বিএনপি যে একটি গণতান্ত্রিক দল, এ নির্বাচনই তার প্রমাণ। নেতা-কর্মীরা প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে তাঁদের নেতা নির্বাচনের সুযোগ পাচ্ছেন। সব সময় দলের নেতা-কর্মীদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’