Thank you for trying Sticky AMP!!

সংবাদ সম্মেলনে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহত আসাদুজ্জামানের পরিবারের সদস্যরা। আজ দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে

মুক্তাগাছায় যুবলীগ কর্মী হত্যায় প্রতিমন্ত্রী, মেয়র ও মেয়রের জামাতার বিরুদ্ধে অভিযোগ

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলায় যুবলীগ কর্মী আসাদুজ্জামান হত্যার ঘটনায় মুক্তাগাছা পৌরসভার মেয়র মো. বিল্লাল হোসেন সরকার ও তাঁর জামাতা মাহবুবুল আলম ওরফে মনিসহ ৩১ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।

মামলার বাদী হয়েছেন নিহত যুবলীগ কর্মী আসাদুজ্জামানের ছেলে তাইব হাসান।

মুক্তাগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই আকন্দ আজ বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান।

তবে আজ রাত সাড়ে নয়টায় মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মজিদ বলেন, মামলার এজাহারে কিছু ভুল পাওয়া গেছে। বাদীকে ভুলগুলো সংশোধন করে দিতে বলা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আবদুল হাই আকন্দ বলেন, যুবলীগ কর্মীকে হত্যার প্রধান পৃষ্ঠপোষক সংসদ সদস্য ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। তবে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ হাতে না থাকায় আইনজীবীর পরামর্শে মামলায় আসামি করা যায়নি।
গত সোমবার রাত নয়টার দিকে মুক্তাগাছা পৌর শহরের আটানি বাজার এলাকায় একটি চায়ের দোকানে কুপিয়ে হত্যা করা হয় আসাদুজ্জামানকে। অভিযোগ ওঠে, মুক্তাগাছায় আওয়ামী লীগের বিরোধের জের হিসেবেই আসাদুজ্জামানকে হত্যা করা হয়।

স্থানীয় ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, মুক্তাগাছা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে দুটি পক্ষ। একটি পক্ষের নেতৃত্বে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। তাঁর পক্ষে আছেন মুক্তাগাছা পৌরসভার মেয়র বিল্লাল হোসেন সরকার ও বিল্লাল হোসেন সরকারের জামাতা মাহবুবুল আলম ওরফে মনি। অপর একটি অংশের নেতৃত্বে আছেন মুক্তাগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হাই আকন্দসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক একাধিক নেতা।

সংবাদ সম্মেলনে আবদুল হাই আকন্দ আরও বলেন, প্রতিমন্ত্রীর পৃষ্ঠপোষকতায় মুক্তাগাছায় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছেন বিল্লাল হোসেন সরকার ও মাহবুবুল আলম। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করার উদ্দেশ্যে নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এর আগেও বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। সর্বশেষ যুবলীগ কর্মী আসাদুজ্জামানকে হত্যা করা হয়েছে।

আসাদুজ্জামানকে হত্যার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আবদুল হাই আকন্দ বলেন, তাঁর হাত কুপিয়ে চারটি অংশ করা হয়। পা কুপিয়ে পাঁচটি অংশ করে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে কেউ এমন নির্মমভাবে খুন করতে পারে এমন আগে কখনো দেখেননি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, আওয়ামী লীগের এ দুটি পক্ষের বিরোধের জের ধরে আধিপত্য বিস্তারের জন্য প্রায় মারামারির ঘটনা ঘটছে মুক্তাগাছায়। কয়েক মাসের মধ্যে উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি অন্তত পাঁচটি মামলা হয়েছে। নিহত যুবলীগ কমী আসাদুজ্জামান অন্তত চারটি মামলার আসামি ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন নিহত আসাদুজ্জামানের স্ত্রী আছিয়া খানম। তিনি স্বামীর হত্যাকারীদের বিচার দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মুক্তাগাছা শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল আমিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ ঘোষ, সাবেক প্রচার সম্পাদক মো. তারেক।

অভিযোগের ব্যাপারে কথা বলতে মক্তাগাছা পৌরসভার মেয়র বিল্লাল হোসেন ও জামাতা মাহবুবুল আলমের মুঠোফোনে ফোন করা হলেও তাঁরা ফোন ধরেননি। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এসব অভিযোগ মিথ্যা। আমি যত দূর জানি, পারিবারিক কারণে আসাদুজ্জামানকে হত্যা করা হয়েছে। এ বিষয় নিয়ে অযথাই মিথ্যাচার করে রাজনৈতিক ফায়দা আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে।’

Also Read: মুক্তাগাছায় মহাসড়কে যুবলীগ কর্মীর লাশ রেখে বিক্ষোভ