প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলার প্রতিবাদে পটুয়াখালীতে মানববন্ধন। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনে
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলার প্রতিবাদে পটুয়াখালীতে মানববন্ধন। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনে

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকার প্রধান কার্যালয়ে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে পটুয়াখালী, সাতক্ষীরা ও গাজীপুরে মানববন্ধন হয়েছে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেছেন, হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে গণমাধ্যমের কণ্ঠ রোধ করা যাবে না। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছিল। পতিত আওয়ামী লীগ সরকার প্রথম আলোকে সরকারি দপ্তরে নিষিদ্ধ করেছিল। অথচ একটি উগ্রগোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে মব সৃষ্টি করে এ ধরনের হামলা করে যাচ্ছে।

হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানানো হয় এসব মানববন্ধন থেকে।

পটুয়াখালী

আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন হয়। এতে গণমাধ্যমকর্মী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মানবজমিন পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি জালাল আহমেদ। তিনি বলেন, স্বাধীন ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদই একটি দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার প্রধান ভিত্তি। অথচ একটি অশুভ শক্তি পরিকল্পিতভাবে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের চেষ্টা করছে, যা দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য মারাত্মক হুমকি।

পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক সমকাল ও আরটিভির প্রতিনিধি মুফতি সালাহউদ্দিন বলেন, স্বাধীনতার পর এই প্রথম দেশের দুটি শীর্ষ গণমাধ্যমের কার্যালয়ে এমন ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটল। এটি ভবিষ্যৎ সাংবাদিকতার জন্য অশনিসংকেত। এখনই এ ধরনের অপশক্তিকে প্রতিহত না করা গেলে গোটা গণমাধ্যম জগৎ অস্তিত্বসংকটে পড়বে।

মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও ললিতকলা নিকেতনের অধ্যক্ষ এবং রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের সহসভাপতি অশোক কুমার দাস, কবি সুভাষ চন্দ্র। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক নয়াদিগন্তের প্রতিনিধি গোলাম কিবরিয়া, সাবেক সভাপতি ও বিটিভি-বাসসের প্রতিনিধি কাজী শামসুর রহমান, বাংলাদেশ প্রতিদিন ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিনিধি সঞ্জয় কুমার দাস, দৈনিক জনকণ্ঠের প্রতিনিধি মোখলেছুর রহমান, বাংলাদেশ বেতারের প্রতিনিধি আতিকুর রহমান, সাংবাদিক আফরিন জাহান, নিউজ টোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের প্রতিনিধি সিকদার জোবায়ের হোসেন, সময় টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার সিকদার জাবির হোসেন, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের প্রতিনিধি মনোজ কান্তি, প্রথম আলোর পটুয়াখালী প্রতিনিধি বিলাস দাস, প্রথম আলোর বাউফল প্রতিনিধি এ বি এম মিজানুর রহমান। এ ছাড়া স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মশিউর রহমান, ইব্রাহিম খলিল, আরিফুজ্জামান তুহিন, তরিকুল ইসলাম, ফিরোজ আহমেদ, জামাল আকন, শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে এবং জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন। আজ বেলা ১১টায় দিকে সাতক্ষীরা নিউমার্কেট চত্বরে

সাতক্ষীরা

আজ বেলা ১১টায় দিকে সাতক্ষীরা নিউমার্কেট চত্বরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব মানববন্ধনের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, একটি উগ্র গোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে মব সৃষ্টি করে গণমাধ্যমের কার্যালয়ে হামলা, অগ্নিসংযোগ করে যাচ্ছে। অথচ সরকার অপরাধীদের গ্রেপ্তার না করে শুধু বিবৃতি দিয়েই দায় সারছে। এটি হতে পারে না। চব্বিশের অভ্যুত্থান এ জন্য হয়নি। অভ্যুত্থান হয়েছিল একটি সুন্দর, সুষ্ঠু ও নিরাপদ বাংলাদেশের জন্য। যেখানে সবাই মতামত ব্যক্ত করতে পারবেন, স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারবেন, নিরাপদে থাকতে পারবেন।

বক্তারা আরও বলেন, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলা চালিয়েই ক্ষ্যান্ত হয়নি, ওই গোষ্ঠী বাঙালি সংস্কৃতির অংশ ছায়ানট ও উদীচী শিল্পগোষ্ঠীর কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করেছে। মানববন্ধন থেকে এসব হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মমতাজ আহমেদ, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান, অর্থসম্পাদক শেখ ফরিদ আহমেদ, সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁ, এস এম জিন্নাহ, গাজী ফরহাদ, এস এম বিপ্লব হোসেন, জি এম সোহরাব হোসাইন, জামাল উদ্দিন, বরুন ব্যানার্জি, হোসেন আলী, সাতক্ষীরায় প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম বেলাল হোসাইন।

প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে গাজীপুরে মানববন্ধন। আজ দুপুরে গাজীপুর প্রেসক্লাবের সামনে

গাজীপুর

দুপুরে গাজীপুর প্রেসক্লাবের উদ্যোগে মানববন্ধন হয়েছে। মানববন্ধনে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদের পাশাপাশি নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে লাঞ্ছিত করার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

মানববন্ধনে গাজীপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মাজহারুল ইসলাম, প্রেসক্লাবের তত্ত্বাবধায়ক সদস্য দেলোয়ার হোসেন, গাজীপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল আহাম্মেদ সরকার, কালের কণ্ঠের নিজস্ব প্রতিবেদক শরীফ আহমেদ, ডেইলি স্টারের জেলা প্রতিনিধি মঞ্জুরুল ইসলাম, সমকালের গাজীপুর প্রতিনিধি ইজাজ আহমেদ, গাজীপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রিপন শাহ, প্রথম আলোর গাজীপুর প্রতিনিধি মাসুদ রানাসহ গাজীপুর প্রেসক্লাবের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

গাজীপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল আহমেদ বলেন, দেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমে এ ধরনের বর্বরোচিত হামলা স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত। গণমাধ্যমের কণ্ঠ রোধ করতেই একটি মহল পরিকল্পিতভাবে এমন বর্বরোচিত ঘটনা ঘটিয়েছে।

মানববন্ধনে উপস্থিত লেখক ও সাংবাদিক ফারদিন ফেরদৌস বলেন, ‘প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের ওপর হামলা এবং অগ্নিসংযোগের মতো বর্বরোচিত কর্মকাণ্ডের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। স্বাধীন সাংবাদিকতার সব বাধা দূর করে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রকে সর্বোচ্চ সোচ্চার থাকতে হবে।’

নেত্রকোনা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের বিচার, ভালুকায় যুবককে পুড়িয়ে হত্যা, প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, ছায়ানট, উদীচীসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক সংগঠনে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে নেত্রকোনার কলমাকান্দায় বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার বিকেলে উপজেলা মোড়ে সিপিবি উপজেলা শাখা এই কর্মসূচির আয়োজন করে। উপজেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি কমরেড সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে বিকেল পাঁচটার দিকে শুরু হওয়া ঘণ্টাব্যাপী কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য দেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় তালুকদার, উপজেলা যুব ইউনিয়নের সভাপতি শরিয়ত উল্লাহ, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি সৌরভ তালুকদার, সাবেক সভাপতি অনিমেষ সরকার, হৃদয় শেখ, ক্ষেতমজুর সমিতির সভাপতি সুভাষ হাজং প্রমুখ।

সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ড জাতির বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে। খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একটি গোষ্ঠী সুপরিকল্পিতভাবে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, ছায়ানট, উদীচীসহ বিভিন্ন মিডিয়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালিয়েছে। ধর্মের দোহাই দিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনার ব্যর্থতার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অতি দ্রুত পদত্যাগ করতে হবে। ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে দেশের মানুষ এই সরকারকে ক্ষমা করবে না। এখন পর্যন্ত সরকার এসব অপরাধমূলক কোনো ঘটনাকেই কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। বিচারহীনতার সংস্কৃতি অব্যাহত থাকলে দেশের মানুষের নিরাপত্তা চরম হুমকির মুখে পড়বে।

কুমিল্লা

প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার-এর কার্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে কুমিল্লায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। একই সঙ্গে সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট হামলা ও ভাঙচুর এবং উদীচী কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। মানববন্ধনে বক্তারা বলেছেন, ‘প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার-এ সন্ত্রাসী হামলার মাধ্যমে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভকে যারা গলাটিপে ধরতে চায়, তাদের প্রতি ধিক্কার জানাচ্ছি।’ আজ বিকেলে কুমিল্লা নগরের কান্দিরাপাড় এলাকায় ঐতিহাসিক টাউন হলের সামনের সড়কে ‘কুমিল্লার সংস্কৃতিকর্মী ও শিল্পীসমাজ এবং কুমিল্লায় কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ’, এ দুটি ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ কর্মসূচিতে গণমাধ্যমকর্মী এবং কুমিল্লার সব সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে কুমিল্লা সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে পরিকল্পিতভাবে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। একই দিন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানটে হামলা ও ভাঙচুর এবং পরদিন শুক্রবার রাতে উদীচী কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার এবং ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির খুনিদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে। এগুলোকে বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা ভাবার সুযোগ নেই। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সংবাদপত্রের অফিসে অগ্নিসংযোগ স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর নগ্ন হামলা বলে আমরা মনে করি।’

কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী এনামুল হক (ফারুক) বলেন, ‘ধর্মকে ব্যবহার করে মৌলবাদকে মাথাচাড়া দিয়ে যদি দেশের ইতিহাসকে আপনারা নষ্ট করতে চান, আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, এ দেশে সেটি কখনোই সম্ভব হবে না। আমরা মনে করি, পরিকল্পিতভাবে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার–এ সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। আগুনের লেলিহান শিখায় যখন আমাদের সংবাদকর্মীরা ভবনের ছাদে আশ্রয় নিয়েছিলেন, সেখানে ধোঁয়ায় তাঁদের অবস্থা যখন মৃত্যুশয্যার মতো হয়েছিল, সেখানে থেকে নারী সাংবাদিকদের যখন বের করা হয়েছিল, তখনো তাঁদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। ধিক্কার জানাই সেসব নেতৃত্বকে, যারা সেই রাতের অন্ধকারে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভকে গলা টিপে ধরতে চেয়েছিল। আমরা বলতে চাই, এভাবে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে গণমাধ্যমের কণ্ঠ রোধ করা যাবে।’

সাংস্কৃতিক সংগঠক শাহজাহান চৌধুরীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক শাহাজাদা এমরান, সাংস্কৃতিক সংগঠক তাপস বকশি, উদীচী শিল্পগোষ্ঠীর কুমিল্লার সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ, চারণ সাংস্কৃতিক সংগঠক সর্দার হুমায়ুন কবির, কুমিল্লা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহার রায়হান প্রমুখ।

মানববন্ধনে সচেতন নাগরিক কমিটি কুমিল্লার সভাপতি অধ্যাপক নিখিল চন্দ্র রায়, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মৃণাল কান্তি গোস্বামী, নজরুল পরিষদ কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক অশোক বড়ুয়া, বিনয় সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন (মাহবুব), সাংস্কৃতিক সংগঠক অধ্যক্ষ বিধান চন্দ্র, রত্না সাহা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ওয়াইডব্লিউসিএর সাধারণ সম্পাদক আইরিন মুক্তা অধিকারী, কুমিল্লা আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ মহিউদ্দিন লিটন, সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম চৌধুরী (খোকন), ওমর ফারুকী তাপস, দিলীপ মজুমদার, আতিকুর রহমান, এন কে রিপন, মাহফুজ নান্টু, জাহিদ পাটোয়ারী, সুমন কবির, তানভীর দিপু, কামরুল হাসান, এইচ এম মহিউদ্দিন, আনোয়ার হোসেন, আরিফ আজগর, সামছুল আলম, লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কাওসার আলম (সোহেল), সাংস্কৃতিক কর্মী রেজবাউল হক (রানা) প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

নারায়ণগঞ্জ

ছায়ানট, উদীচী, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার-এর ওপর হামলার প্রতিবাদ এবং শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে সাংস্কৃতিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ সমাবেশের আয়োজন করে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট। সংগঠনের সভাপতি মনি সুপান্থের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক দীনা তাজরীনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি এবং উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর জেলা কমিটির সভাপতি জাহিদুল হক। রফিউর রাব্বি বলেন, আওয়ামী দুঃশাসনের পরে সবাই আশা করেছেন একটি মানবিক, সুশাসন ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা পাবে। দেশটি ধর্ম–জাতি–গোত্রনির্বিশেষে এ ভূখণ্ডে বসবাসরত সবার দেশ হবে। সব মত ও পথের স্বাধীনতা নিশ্চিৎ হবে, কিন্তু তা হয়নি। শেখ হাসিনা পতনের পর এক উগ্রবাদী রিলিজিয়ন-ফ্যাসিজমের উদ্ভব ঘটেছে। দেশে যেসব ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম একটি সাম্য, ন্যায়বিচার ও মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘদিন ধরে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, আজ তাদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে উপলক্ষে করে আজ তারা ছায়ানট, উদীচী, প্রথম আলো, ডেইলি স্টার–এ হামলা করছে, আগুন দিচ্ছে। সরকার চূড়ান্তভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে।

বক্তারা বলেন, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও গণমাধ্যমের ওপর হামলা মুক্তচিন্তা ও গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তাঁরা। একই সঙ্গে শরিফ ওসমান হাদির হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আহ্বান জানান বক্তারা।

সমাবেশে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটভুক্ত বিভিন্ন সংগঠনের শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন। আবৃত্তি পরিবেশন করেন ভবানী শংকর রায়, জিয়াউল ইসলাম, পিন্টু সাহা, ডলি বণিকসহ আরও অনেকে।