
টাঙ্গাইলের সখীপুরে মুখে প্লাস্টিকের বয়াম আটকে থাকা এক মা কুকুরকে প্রায় ৩২ ঘণ্টা পর বিপদমুক্ত করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সখীপুর পৌরসভার ময়থাপাড়া এলাকায় বিভিন্ন যন্ত্রের সাহায্যে কৌশলে বয়ামটি কেটে কুকুরটির মুখ থেকে বের করেন আবু তালেব নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি। এতে কুকুরটির সাতটি ছানা আবার দুধ পান করতে পেয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে।
এর আগে গত সোমবার সকালে খাবারের সন্ধানে একটি দোকানে ঢোকে মা কুকুরটি। একপর্যায়ে প্লাস্টিকের বয়ামের ভেতর মুখ ঢুকিয়ে দেয় এটি। পরে বয়ামটি মুখে আটকে যায়। তখন থেকে কুকুরটি এদিক-ওদিক ছুটতে থাকে এবং বিভিন্নভাবে বয়ামটি খোলার চেষ্টা করে। কিন্তু কিছুতেই এটি খুলছিল না।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, ওই মা কুকুরটির সাতটি ছানা আছে। দুধ না পেয়ে ছানাগুলো কান্নাকাটি শুরু করে। স্থানীয় বাসিন্দা ও হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মোজাম্মেল হকের বাসায় থাকে মা কুকুরটি। পরে তিনি বিষয়টি দেখতে পেয়ে সখীপুর পৌরসভার দারোয়ান আবু তালেবের কাছে সাহায্য চান।
মোজাম্মেল হক সজল বলেন, ‘আবু তালেব ঝুঁকি নিয়ে কাজটি করেছেন। এ জন্য তাঁকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।’
কুকুরটিকে বিপদমুক্ত করতে পেরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন আবু তালেবও। তিনি বলেন, ‘আমি তো গরিব মানুষ। মানুষের তেমন উপকার করতে পারি না। অন্তত একটি বিপদগ্রস্ত প্রাণীকে বাঁচাতে পেরেছি। কাজটি করে আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।’
আবু তালেব আরও বলেন, ‘ফেসবুকে দেখেছি, পাবনার ঈশ্বরদীতে এক নারী আটটি কুকুরের বাচ্চা মেরে পুকুরে ফেলে দেন। আর আমি সাতটি বাচ্চার দিকে তাকিয়ে মা কুকুরটাকে ঝুঁকি নিয়ে বিপদমুক্ত করেছি।’
এই কাজকে প্রশংসনীয় বলে উল্লেখ করেছেন সখীপুর পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল রনী। তিনি বলেন, ‘একটি অসহায় প্রাণীকে বিপদমুক্ত করতে পৌরসভার এক কর্মী যে ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে এসেছেন, এটি সমাজে ইতিবাচক বার্তা দেবে। আমরা চাই মানুষ শুধু মানুষের জন্য নয়, সব প্রাণীর প্রতিও সহমর্মিতা দেখাক।’