ক্রিকেট খেলা দেখে বাড়ি ফিরছিলেন নুরউদ্দিন মোহাম্মদ (৩৫) ও তাজ উদ্দিন (৩৬)। পথে কাঠ ও বাঁশের সেতু পার হওয়ার সময় মোটরসাইকেলসহ হালদা নদীতে পড়ে যান তাঁরা। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে ঘটনাস্থলের কয়েক শ মিটার দূরে প্রবাসী নুরউদ্দিনের লাশ পাওয়া যায়।
গতকাল বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার সুয়াবিল ইউনিয়নের সীদ্ধাশ্রম ঘাট এলাকায় হালদা নদীর ওপরের কাঠ ও বাঁশের সেতু থেকে ছিটকে পড়ে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় লোকজন তাজ উদ্দিনকে নদী থেকে উদ্ধার করতে পারলেও অপরজনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন রাত ১২টায় অভিযান বন্ধ করে চলে যান। পরে রাত সাড়ে তিনটার দিকে নুরউদ্দিনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
নুরউদ্দিন স্থানীয় সুয়াবিল ইউনিয়নের পাঁচ পুকুরিয়া চন্দ্রঘোনা গ্রামের আবদুল ইসলামের ছেলে। গত রমজানে তাঁর বিয়ে হয় বলে জানায় পরিবার। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে থাকতেন তিনি। তাঁর সঙ্গে মোটরসাইকেলের পেছনের আসনে থাকা তাজ উদ্দিন স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন।
নুরউদ্দিনের চাচা মো. জহুরুল আলম বলেন, ঈদের কয়েক দিন আগে বিয়ে করেন নুরউদ্দিন। এর মধ্যে এমন দুর্ঘটনায় পরিবারটি এলোমেলো হয়ে গেল। কিছুদিন পর কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু দুর্ঘটনায় না–ফেরার দেশে যেতে হলো তাঁকে।
গতকাল বিকেলে প্রবাসী নুরউদ্দিন ও শিক্ষক তাজ উদ্দিন মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ির কাছে একটি মাঠে ক্রিকেট টিমের খেলা দেখতে যান। খেলা শেষে বাজার করে বাড়ি ফিরছিলেন দুজন। নুরউদ্দিন মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন আর তাজ উদ্দিন ছিলেন পেছনের আসনে বসা। হালদা নদীর কাঠ ও বাঁশের বেড়ার সেতু দিয়ে পার হওয়ার সময় মোটরসাইকেলসহ দুজন নদীতে পড়ে যান। সেতুটি মানুষ কিংবা গাড়ি উঠলেই কাঁপে। পাশে নিরাপত্তা বেষ্টনীও নেই বলে জানান জহুরুল আলম।
আজ সকালে ফটিকছড়ি ফায়ার অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঘটনার পর নদী এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিখোঁজ প্রবাসীর খোঁজ পাননি। পরে রাত সাড়ে তিনটার দিকে ফোনে খবর পান, স্থানীয় লোকজন তাঁর লাশ উদ্ধার করেছেন নদী থেকে।
ফটিকছড়ির ভূজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবুল হক প্রথম আলোকে বলেন, পরিবারের অভিযোগ না থাকায় নুরউদ্দিনের লাশ বিনা ময়নাতদন্তে হস্তান্তর করা হয়েছে।