ফতুল্লায় বাউলশিল্পীর স্বামীর ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার

মরদেহ
প্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় সুমন খলিফা (৩৫) নামের এক যুবকের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে উপজেলার মধ্য নরসিংপুর এলাকার সড়কের পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে (ভিক্টোরিয়া) পাঠানো হয়েছে। সুমন খলিফা নারায়ণগঞ্জের এক বাউলশিল্পীর স্বামী।

সুমন খলিফা বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার মন্টু খলিফার ছেলে। তাঁর স্ত্রী সোনিয়া আক্তার নারায়ণগঞ্জের বাউল ঘরানার সংগীতশিল্পী। সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকার মৌচাক এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।

পুলিশ জানায়, রোববার রাতে সুমন-সোনিয়া ফতুল্লার পঞ্চবটীতে গান পরিবেশন করতে যান। রাতের একটি পর্যায়ে সুমন বাইরে বের হলে আর ফিরে আসেননি।

সোনিয়া সরকার সাংবাদিকদের জানান, রোববার সন্ধ্যায় তাঁকে পঞ্চবটী বাউল ক্লাবে দিয়ে চলে যান স্বামী সুমন। এরপর ইজিবাইকে বাসায় ফেরার পথে ভোরে শহরের ইসদাইর এলাকায় ছিনতাইকারীরা তাঁর (সোনিয়া সরকার) পথরোধ করে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মানিব্যাগ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়। তারপর তিনি বাসায় গিয়ে স্বামীকে না পেয়ে ছিনতাইয়ের বিষয়ে অভিযোগ করতে ফতুল্লায় থানায় যান। থানায় গিয়ে জানতে পারেন তাঁর স্বামী সুমন খুন হয়েছেন।

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে জানান, নিহত সুমনের শরীর ও মাথার বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

ওই দম্পতির সহযোগী বাউল শিল্পী সোহেল সরকার সাংবাদিকদের জানান, গতকাল রোববার বাংলাদেশ বাউলশিল্পী ফাউন্ডেশনের বর্ষপূর্তি ছিল। এ উপলক্ষে পঞ্চবটী বাউল ক্লাবে ওই দিন রাতে দোয়া মাহফিল শেষে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়। সোনিয়া ও তাঁর স্বামী সুমন মাহফিলে অংশ নেন। এরপর উপস্থিত অনেক শিল্পী একটা করে গান গান। এসময় সোনিয়াও একটি গান গেয়ে চলে যান। সোনিয়া অল্প কিছুদিন ধরে বাউল করে গান করেন।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মো. হাসিনুজ্জামান জানান, মধ্য নরসিংপুর এলাকায় হারুন মিয়ার পরিত্যক্ত বাড়ির সামনে আধা পাকা রাস্তা থেকে সুমনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাঁকে কুপিয়ে হত্যার পর সেখানে ফেলে যায়। সকালে স্থানীয় লোকজন লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন।

এ ঘটনায় নিহত সুমন খলিফার স্ত্রী সোনিয়া সরকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদী। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, সুমন তাঁর পূর্বের স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দেড় বছর পূর্বে সোনিয়া সরকারকে বিয়ে করেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।