গফরগাঁওয়ে উপজেলা প্রশাসন ও বিএনপির মুখোমুখি অবস্থানে অবশেষে ইউএনওকে বদলি

গফরগাঁওয়ের বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবাইয়া ইয়াসমিন
ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা প্রশাসন ও বিএনপির মুখোমুখি অবস্থানের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবাইয়া ইয়াসমিনকে বদলি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল হায়াত মো. রফিক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে ইউএনও রুবাইয়া ইয়াসমিনকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করা হয়।

এর আগে গতকাল সোমবার ইউনিয়ন পরিষদ স্থানান্তর ও সরকারি বালু নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ও বিএনপি পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল।

ইউএনও রুবাইয়া ইয়াসমিন গতকাল প্রথম আলোকে বলেছিলেন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির নেতা আলমগীর মাহমুদের অনৈতিক দাবি না মানায় হেনস্তা করার জন্য কর্মসূচি দিয়েছিলেন। কিন্তু সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা আগেই কর্মসূচি করে ষড়যন্ত্র প্রতিহত করেছেন। তিনি বলেন, চরআলগী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় বিএনপি নেতার পছন্দমতো জায়গায় স্থানান্তর না করা এবং পাঁচবাগ ইউনিয়নের গলাকাটা মৌজার বিআইডব্লিউটিএর বালু ‘সিস্টেম করে’ তাঁকে না দেওয়ায় বিরাগ হন ওই বিএনপি নেতা।

ইউএনও রুবাইয়া ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে তাঁকে প্রত্যাহারের দাবিতে গতকাল উপজেলা পরিষদ ঘেরাও কর্মসূচি দেন জেলা দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলমের সমর্থকেরা। গতকাল সকাল ১০টায় কর্মসূচি ঘোষণা করলে এর পাল্টা হিসেবে সকাল সাড়ে ৯টায় উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে ইউএনওর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হেনস্তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচি করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রের নির্দেশে বিএনপি পরে কোনো কর্মসূচি করেনি।

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের মানববন্ধন। সোমবার সকালে উপজেলা পরিষদের সামনে

এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে বিদায়ী ইউএনও রুবাইয়া ইয়াসমিন আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘চলমান পরিস্থিতিতে এখানে আমার মন উঠে গেছে, থাকতে ইচ্ছা হচ্ছে না। মানসিকভাবে এক জায়গায় ভালো না লাগলে সেখানে থাকা যায় না এবং কাজও করা সম্ভব নয়। তাই বদলির আদেশ আমি নিজেই করিয়েছি।’

অপর দিকে জেলা দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইউএনও ফ্যাসিস্টের দোসর। আমার কোনো ব্যক্তিগত বিষয় ছিল না, কিন্তু ইউএনও সব জায়গায় আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন। চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে সরকারি জায়গায় ইউনিয়ন পরিষদ স্থানান্তরের কথা বলেছিলাম, বালুর কোনো বিষয় ছিল না। আজ তাঁকে বদলির মাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ যে অসত্য ছিল, তা প্রমাণিত হয়েছে। ফ্যাসিস্ট ইউএনওর বদলিতে মানুষ উচ্ছ্বসিত।’