শিশু হত্যা মামলার আসামির বসতঘর আগুনে পুড়িয়ে দিলেন জনতা

শিশু আদিবা ইসলাম হত্যা মামলার প্রধান আসামি মো. ইমনের বসতঘর পুড়িয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। পরে ফায়ার সার্ভিস বিভাগের লোকেরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। শনিবার চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার পাঁচদোনা গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার পাঁচদোনা গ্রামের শিশু আদিবা ইসলাম (৯) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি মো. ইমনের বসতঘর আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছেন উত্তেজিত জনতা। আজ শনিবার সকাল ১০টায় উপজেলার পাঁচদোনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আগুনে আসবাব, মালামালসহ আধা পাকা বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

গত সোমবার বিকেলে শিশু আদিবাকে অপহরণের পর হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ওই শিশুর মা প্রতিবেশী মো. ইমন ও মো. ইয়াসিনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তাঁরা এখন কারাগারে রয়েছেন।

পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ সকাল ১০টায় উপজেলার পাঁচদোনা গ্রাম ও আশপাশের এলাকার লোকজন অভিযুক্ত মো. ইমনের বাড়িতে যান। এ সময় ওই বাড়িতে ইমনের বাবা মজিবুর রহমানসহ পরিবারের সদস্যদের কেউই উপস্থিত ছিলেন না। উত্তেজিত অর্ধশতাধিক লোক একপর্যায়ে ইমনের বাড়িতে ঢুকে তাঁদের আধা পাকা বসতঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেন। এতে ওই বসতঘরের চারটি কক্ষ, আসবাব, কাপড়চোপর ও অন্যান্য জিনিসপত্র পুড়ে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের লোকজন সেখানে যান এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

মামলার প্রধান আসামি মো. ইমনের বাবা মজিবুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই শিশু হত্যাকাণ্ডের পর ইমনের পরিবারের লোকজন গা ঢাকা দিয়েছেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সালেহ আহম্মেদ বলেন, ঘটনাটি জেনে সেখানে পুলিশ পাঠিয়েছেন। এ ঘটনায় তাঁর থানায় কোনো অভিযোগ বা মামলা হয়নি।

পুলিশ, পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার বিকেলে শিশু আদিবা তার এক সহপাঠীর সঙ্গে বাড়ির পাশের মাঠে খেলছিল। এ সময় প্রতিবেশী ট্রলারশ্রমিক মো. ইমন ফুল দেওয়ার কথা বলে তাকে কিছুটা দূরে ডেকে নিয়ে অপহরণ করে হত্যা করেন। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে গত মঙ্গলবার রাতে শিশুটির মা শামীমা আক্তার থানায় একটি জিডি করেন।

পরে মো. ইমন (২১) ও মো. ইয়াসিনকে (১৯) আসামি করে অপহরণ মামলা করেন শিশুটির মা শামীমা। এ মামলার পর দুই আসামিকে আটক করা হয়। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত বুধবার বাড়ির পাশের একটি পুকুরের পাড় থেকে আদিবার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর অপহরণ মামলার সঙ্গে হত্যার ধারাও যুক্ত করা হয়। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার বিকেলে চাঁদপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের মাধ্যমে ইমন ও ইয়াসিনকে কারাগারে পাঠানো হয়।