ইজতেমা মাঠে জায়গা না পেয়ে অনেকে সড়কে নামাজ আদায় করেন। শুক্রবার দুপুরে ইজতেমা মাঠ-সংলগ্ন কামারপাড়া সড়কে
ইজতেমা মাঠে জায়গা না পেয়ে অনেকে সড়কে নামাজ আদায় করেন। শুক্রবার দুপুরে ইজতেমা মাঠ-সংলগ্ন কামারপাড়া সড়কে

হাজারো মুসল্লির অংশগ্রহণে প্রথম ধাপের ইজতেমায় জুমার নামাজ

গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগতীরে হাজারো মুসল্লির অংশগ্রহণে তাবলিগের শুরায়ে নেজাম বা মাওলানা জোবায়ের অনুসারীদের প্রথম ধাপের ইজতেমার জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার বেলা একটা ৫০ মিনিটে মাওলানা জোবায়ের হোসেনের ইমামতিতে এ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় মূল ইজতেমা মাঠে জায়গা না পেয়ে মুসল্লিদের অনেকে মাঠ-সংলগ্ন সড়ক, মহাসড়ক ও ফাঁকা জায়গায় নামাজ আদায় করেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলার আমবয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এ ধাপে অংশ নিতে আসা মুসল্লিতে ভরে যায় ইজতেমা মাঠ। এর মধ্যে ইজতেমার জামাতের সঙ্গে জুমার নামাজ পড়তে আজ সকাল ১০টা থেকেই দল বেঁধে ইজতেমা মাঠে আসতে থাকেন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকার সাধারণ মুসল্লিরা। একপর্যায়ে মাঠে জায়গা না পেয়ে অনেকেই রাস্তায় বা ফাঁকা জায়গায় দাঁড়িয়ে পড়েন।

জুমার নামাজ পড়ানোর (ইমাম) জন্য মাওলানা জোবায়ের দাঁড়ান তুরাগ নদের পশ্চিম পাড়ে আইইউবিএটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে। নামাজের খুতবা শুরু হয় বেলা একটা ৪৩ মিনিটে। এরপর নামাজ শুরু হয় একটা ৫০ মিনিটে। এ সময় মাঠে জায়গা না পেয়ে অনেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাটাগেট, স্টেশন রোড এলাকাসহ কামারপাড়া-মন্নুগেট সড়কে দাঁড়ান। এতে কিছু সময়ের জন্য সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, টঙ্গীর ইজতেমা মাঠ ও তুরাগ নদের তীরে হাজারো মুসল্লির আনাগোনা। মূল ইজতেমা মাঠে বাঁশ ও চটের তৈরি শামিয়ানার নিচে অবস্থান নেন হাজার হাজার মুসল্লি। জুমার নামাজে অংশ নিতে সকাল থেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে মুসল্লিরা ইজতেমা মাঠের দিকে আসতে থাকেন। কারও হাতে নামাজের বিছানা, কারও হাতে পাটি। এর মধ্যে বেলা একটা ৫০ মিনিটে মাইকে ভেসে আসে নামাজের আকামত। মুহূর্তেই বন্ধ হয়ে যায় সব ছোটাছুটি। যে যেখানে ছিলেন, বিছানা পেতে নামাজে দাঁড়িয়ে যান। মুসল্লিদের সেজদায় মাথা নোয়ানোর মাধ্যমে পুরো এলাকায় নেমে আসে পিনপতন নীরবতা।

নামাজ শেষে ঢাকার উত্তরার বাসিন্দা মো. আকমল হোসেনের সঙ্গে কথা হয়। মাঠে জায়গা না পেয়ে তিনি কামারপাড়া-মন্নুগেট সড়কে নামাজ আদায় করেন। আকমল হোসেন বলেন, ‘প্রতিবছর ইজতেমায় জুমার নামাজ পড়ি। এবারও পড়তে এসেছি। তবে এবার ভিড় কিছুটা কম। সে জন্য স্বস্তিতে নামাজ পড়তে পেরেছি।’ তিনি বলেন, ‘বড় জামাতে নামাজ পড়ার ফজিলত অন্য রকম। আমার বাবা, দাদাকেও ইজতেমা মাঠে একইভাবে নামাজ পড়তে দেখেছি।’

বিগত বছরগুলোয় তাবলিগের দুই পক্ষ মাওলানা জোবায়ের ও সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা দুই পর্বে আলাদাভাবে ইজতেমা করতেন। তবে এবারই প্রথম মাওলানা জোবায়ের অনুসারীরা দুই ধাপে ইজতেমা করবেন। এর মধ্যে আজ ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হবে প্রথম ধাপের ইজতেমা। এ ধাপে অংশ নেবেন ৪১ জেলা ও ঢাকার একাংশের মুসল্লিরা। এরপর ৩ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় ধাপের ইজতেমা। ২ ও ৫ ফেব্রুয়ারি দুই পর্বের আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তৃতীয় ধাপে আগামী ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি মাওলানা সাদের অনুসারীদের ইজতেমা পালনের কথা আছে।