
জুমার নামাজের পর নিজের ফ্ল্যাটে ফিরছিলেন এক ব্যক্তি। লিফটে গিয়ে দেখেন, অজ্ঞাত ব্যক্তি উপস্থিত। এরপর কিছুই মনে নেই। তিন ঘণ্টা পর চেতনা ফিরে এলে দেখেন, ঘরের সব মূল্যবান জিনিস চুরি হয়ে গেছে।
গত শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় মোস্তফা কামাল নামের এক ব্যক্তির বাসায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গতকাল শনিবার বিকেলে শ্রীপুর থানায় অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
ব্যবসায়ীর ধারণা, ‘শয়তানের নিশ্বাস’ নামের রাসায়নিক ব্যবহার করে তাঁকে অচেতন করে এ ঘটনা ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ভুক্তভোগী মোস্তফা কামাল ওই বাড়ি ও মাওনা চৌরাস্তার মোবাইল মার্কেটের স্বত্বাধিকারী।
মোস্তফা কামাল ঘটনার বর্ণনায় বলেন, শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বেলা তিনটার দিকে তিনি বাসায় ফিরছিলেন। তিনি লিফটের দিকে এগিয়ে যান। এর আগে থেকে দুর্বৃত্তরা তাঁর পিছু নেয়। তাঁরা কৌশলে লিফটে উঠে পড়ে। তিনি ধারণা করেন, লিফটে থাকার সময় তাঁর মুঠোফোনের হোয়াটসঅ্যাপে নম্বরে কল করার নাম করে তাঁর মনোযোগ সরিয়ে ‘শয়তানের নিশ্বাস’ নামের চেতনানাশক প্রয়োগ করে সঙ্গে থাকা অজ্ঞাত ব্যক্তি। এতে তিনি দ্রুত অচেতন হয়ে পড়েন। এর পর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তাঁর কিছুই মনে নেই। ঘটনার সময় স্ত্রী-সন্তান বাসায় ছিলেন না। সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যরা বাসায় ফিরে তাঁকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ সময় পরিবারের সদস্যরা দেখতে পান, ফ্ল্যাটের আলমারির ড্রয়ার এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে। পরে খোঁজ করে বুঝতে পারেন, মূল্যবান সব জিনিসপত্র চুরি হয়ে গেছে।
মোস্তফা কামালের অভিযোগ, বাসা থেকে নগদ ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ২ লাখ টাকা সমমূল্যের সৌদি রিয়াল, প্রায় ৩০ লাখ টাকা মূল্যের ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার, আড়াই লাখ টাকার ডায়মন্ডের বিয়ের আংটি এবং একটি স্মার্ট টিভি চুরি হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে ২১ হাজার ২০০ টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। টাকা ও স্বর্ণালংকারের পাশাপাশি জাতীয় পরিচয়পত্র, পুরোনো পাসপোর্ট এবং স্বাক্ষর করা চেক বইও নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কাজ করছে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আসামিদের শনাক্ত ও লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারে পুলিশ কাজ করছে।