Thank you for trying Sticky AMP!!

নরসিংদীতে গাঁজাসহ গ্রেপ্তারের পর ডিবি হেফাজতে অসুস্থ, পরে হাসপাতালে মৃত্যু

১০০ শয্যা বিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগ

নরসিংদীতে ১০ কেজি গাঁজাসহ গ্রেপ্তারের পর জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) হেফাজতে থাকা এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। প্রথম আলোকে এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।

ডিবি হেফাজতে অসুস্থ হয়ে পড়ে মারা যাওয়া নুরতাজ বেগম (৫৩) নরসিংদী শহরের দক্ষিণ কান্দাপাড়া এলাকার মৃত পিয়ার হোসেনের স্ত্রী। ডিবির দাবি, নুরতাজ বেগম এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। নুরতাজের মৃত্যুর পাঁচ ঘণ্টা পরও বেলা দেড়টা পর্যন্ত স্বজনদের কেউ হাসপাতালে আসেননি।

ডিবি জানিয়েছে, গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপপরিদর্শক নাইমুল মোস্তাকের নেতৃত্বে একটি দল ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জেলখানার মোড়ে অভিযান চালায়। এ সময় একটি রেস্তোরাঁর পাশে সন্দেহভাজন নুরতাজ বেগমকে তল্লাশি করে তাঁর কাছ থেকে ১০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এরপর তাঁকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। রাত ১২টার দিকে তাঁর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়।

ডিবি হেফাজতে থাকা অবস্থায় রাত তিনটার দিকে পেটে ব্যথা শুরু হলে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এটি জানার পরপরই তাঁকে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নেওয়ার পর তিনি সুস্থও হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু সকাল আটটার দিকে হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করেন তিনি। সাড়ে আটটার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ এন এম মিজানুর রহমান জানান, পেটব্যথাজনিত অসুস্থতা নিয়ে নুরতাজ বেগমকে গতকাল রাতে আমাদের হাসপাতালে ভর্তি করেন ডিবির সদস্যরা। চিকিৎসা দেওয়ার পর অনেকটাই সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। পরে তাঁর বুকব্যথা শুরু হলে আবারও তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়। হার্ট অ্যাটাকে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

গোয়েন্দা শাখা পুলিশের নরসিংদী জেলা কার্যালয়ের উপপরিদর্শক নাইমুল মোস্তাক বলেন, নুরতাজ বেগমকে গতকাল রাতে ১০ কেজি গাঁজাসহ গ্রেপ্তারের পর রাতেই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়। রাতে অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। নাইমুল মোস্তাক দাবি করেন, এলাকায় একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন  নুরতাজ বেগম। দুই মাস আগেও ১০ কেজি গাঁজাসহ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। ওই ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাও হয়েছিল। জামিনে বেরিয়ে আবার মাদক ব্যবসায় যুক্ত হয়েছিলেন ওই নারী।

এ বিষয়ে নরসিংদীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গাঁজাসহ গ্রেপ্তারের পর ডিবি হেফাজতে থাকা ওই নারী অসুস্থতা বোধ করলে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। আইন অনুযায়ী একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে তাঁর লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এ সময় তাঁর শরীরের কোথাও আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, এই ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) এস এ এম ফজল-ই-খোদাকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।