Thank you for trying Sticky AMP!!

পঞ্চগড়ে মেয়ের শ্লীলতাহানির বিচার না পেয়ে বাবার ‘আত্মহত্যা’

পঞ্চগড়ে কলেজছাত্রী (২০) মেয়েকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) বিচার দিয়ে সুরাহা না পেয়ে এক বাবা (৫০) ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। বুধবার দিবাগত রাতে সদর উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নে ওই ব্যক্তির গলায় ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এলাকাবাসী জানান, বুধবার রাতে বাড়ির কাছে পুকুরপাড়ে একটি গাছে ওই ব্যক্তির গলায় চাদর প্যাঁচানো ঝুলন্ত লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেন তাঁরা। খবর পেয়ে রাতেই সদর থানার পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে। বৃহস্পতিবার দুপুরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

স্বজনদের অভিযোগ, মেয়ের শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছিলেন ওই ব্যক্তি। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যানের গাফিলতির কারণে তিনি বিচার পাননি। এ জন্য হতাশা থেকে তিনি ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। তবে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

মৃতের স্বজনেরা জানান, গত ১৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় পলাশ চন্দ্র বর্মণ (৩০) নামের এক প্রতিবেশী যুবক ওই কলেজছাত্রীকে টানাহেঁচড়া করে শ্লীলতাহানি করেন। এ ঘটনায় আহত হলে ওই তরুণীকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

মৃতের ছেলে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার বিচার চেয়ে মাগুরা ইউপির চেয়ারম্যান জ্যোতিষ চন্দ্র রায়কে মৌখিকভাবে জানান বাবা। অভিযোগ শুনে ইউপি চেয়ারম্যান বিচার করবেন বলে আশ্বাস দেন। পরে ২৪ জানুয়ারি লিখিত অভিযোগ করেন তাঁরা। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল দুপুরে দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে বসার নোটিশ দেন ইউপি চেয়ারম্যান।

মৃতের ছেলের ভাষ্য, ‘ওই বৈঠকে অভিযুক্ত পলাশ থাকবেন না, শুধু তাঁর অভিভাবকেরা থাকবেন জানার পর আমরা চেয়ারম্যানকে পলাশকে হাজির করতে বলি। পলাশ পলাতক শুনে আমরা ওই বৈঠকে যাইনি। এটা নিয়ে আমার বাবা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে তাঁকে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।’ তাঁর অভিযোগ, ‘বিচার না পেয়েই আমার বাবা আত্মহত্যা করেছেন। আমার বাবার সৎকারের কাজ শেষ হলে আমরা এ বিষয়ে অভিযোগ করব।’

অভিযোগের বিষয়ে মাগুরা ইউপির চেয়ারম্যান জ্যোতিষ চন্দ্র রায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত পলাশ পলাতক। এরপরও অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল দুপুরে সালিসে বসার কথা ছিল। কিন্তু বেলা তিনটার দিকে ওই ছাত্রীর বড় ভাই ফোন করে জানান, তাঁরা আসবেন না। পরে রাতে জানতে পারেন, তাঁর বাবা আত্মহত্যা করেছেন। তিনি বলেন, ‘এখানে আমার কোনো গাফিলতি ছিল না। লাশের সৎকারের জন্য আমি মৃতের বাড়িতে এসেছি।’

পঞ্চগড় সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. দুলাল উদ্দিন বলেন, ওই ব্যক্তি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আত্মহত্যার ঘটনায় কারও বিরুদ্ধে প্ররোচনার অভিযোগ পরিবার করলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।