নাসিরনগরে মামা–ভাগনের সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত অর্ধশতাধিক

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানচিত্র
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানচিত্র

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় মামা ও ভাগনের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় নারীসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার চাপড়তলা ইউনিয়নের বেঙ্গাউতা গ্রামে এ সংঘর্ষ হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বরে চাপড়তলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে (ইউপি) সদস্য পদে জাহের মোল্লার কাছে পরাজিত হন তাঁর ভাগনে মো. মুক্তার মিয়া। এর পর থেকে মামা–ভাগনের মধ্যে বিরোধ প্রকাশ্যে রূপ নেয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে মুক্তার মিয়ার সমর্থক কৃষক জমুজ মিয়াকে ইউপি সদস্য জাহের মোল্লার পক্ষের লোকজন মারধর করেন।

এর জের ধরে আজ সকালে দুই পক্ষের লোকজন দা, ছুরি, টেঁটা, বল্লম ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে স্থানীয় পাঁচ ব্যক্তি আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

মুক্তার মিয়ার পক্ষের আহত ব্যক্তিরা হলেন মন্টু মিয়া (৫৬), বাছির মিয়া (৪৩), সৈয়দ মিয়া (৪২), রেনু মিয়া (৩৯), জয়নাল মিয়া (৪৫), রুহেনা বেগম (৩৮), লালু মিয়া (৪৭), রমুজ মিয়া (৪৪), আবিদ মিয়া (৫০), দাউদ মিয়া (৩৩), আলী নেওয়াজ (৩২), আমির খাঁ (৪৮), মুসলিম মিয়া (৪৩), হান্নান মিয়া (৪৫), নুরুজ মিয়া (৪১), সবুজ মিয়া (৩০), সজন মিয়া (২৯), আহাদ মিয়া (৩৪), অলী মিয়া (৩৭), রিপন মিয়া (৩৮), কাইয়ুম মিয়া (৪৩), রামিন মিয়া (৩৬)। তাঁরা সবাই নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।

জাহের মোল্লার পক্ষের আহত ব্যক্তিরা হলেন জজ মিয়া (৪৫), ছোট্ট মিয়া (৪৮), আলী রাজা (৫৬), মনসুর রহমান (৩৪), মনির মিয়া (৩৮), মারজান মিয়া (৩১), রহমাত আলী (৩৪), লোকমান মিয়া (৩৯), মুশাহিদ মিয়া (৪৪), মাহফুজ মিয়া (৬০), মো. সালাউদ্দিন (৪৩), রেতু মিয়া (৩৯), আলী রহমান (৪৫), রেজিয়া বেগম (৩৫), জামিদা বেগম (৩৩), খায়রুন বেগম (৩০), হাফছা বেগম (৩০), মনি বেগম (২৮), জোনাকী আক্তার (৩০), রাবেয়া বেগম (৩৬), তাছলিমা বেগম (৩৪) ও মনোয়ারা বেগম (৩৮)।

আহত তাছলিমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, প্রতিপক্ষ মুক্তার মিয়ার পক্ষের লোকজন রাস্তা অবরোধ করে রাখায় চিকিৎসা নিতে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে পারেনি তাঁরা। পরে পার্শ্ববর্তী হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে ইউপি সদস্য জাহের মোল্লা ও তাঁর ভাগনে মুক্তার মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাঁরা ধরেননি।

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুল্লাহ সরকার প্রথম আলোকে বলেন, গত ইউপি নির্বাচন কেন্দ্র করে মামা-ভাগনের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হলে পুলিশ গিয়ে তাঁদের বুঝিয়ে বাড়িতে পাঠায়। আজ দুই পক্ষকে বসিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির কথা ছিল। কিন্তু কোনো পক্ষই কথা না শুনে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ আসেনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।