কুমিল্লা-৩ আসনের জামায়াতের প্রার্থী ইউসুফ হাকিমের (সোহেল) বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতি করে জমি আত্মসাতের অভিযোগে নারীর সংবাদ সম্মেলন। বুধবার বিকেলে নগরের রেসকোর্স এলাকার একটি হোটেলের হলরুমে
কুমিল্লা-৩ আসনের জামায়াতের প্রার্থী ইউসুফ হাকিমের (সোহেল) বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতি করে জমি আত্মসাতের অভিযোগে নারীর সংবাদ সম্মেলন। বুধবার বিকেলে নগরের রেসকোর্স এলাকার একটি হোটেলের হলরুমে

জামায়াতের প্রার্থীর বিরুদ্ধে জমি আত্মসাতের অভিযোগ, ষড়যন্ত্র বললেন জামায়াত নেতা

কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ইউসুফ হাকিমের (সোহেল) বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতি করে জমি আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন এক নারী। বুধবার বিকেলে কানিজ ফাতিমা নামের এক নারী সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন। তবে ইউসুফ হাকিম অভিযোগকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন।

বুধবার বিকেলে কুমিল্লা নগরের রেসকোর্স এলাকার হোটেলের হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। কানিজ ফাতিমা নগরের বাগিচাগাঁও এলাকার বাসিন্দা। ইউসুফ হাকিম কুমিল্লা উত্তর জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ও মুরাদনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান।

লিখিত বক্তব্যে কানিজ ফাতিমা বলেন, ‘আমার স্বামী ফরহাদ হোসাইন বন্ধন ফুডস অ্যাড বেভারেজ লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি ২০০৫ সালে কুমিল্লাতে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে কোম্পানির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল ইসলাম গা–ঢাকা দিলে কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। তখন কোম্পানির কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ২০১৬ সালে আমার স্বামী ফরহাদ হোসাইন ও আরেক পরিচালক মহসিন রেজাকে সব কার্যক্রম পরিচালনা, তথা জমি ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়। যেহেতু পাঁচ শতাধিক শেয়ারহোল্ডার রয়েছে, সকলেই কোম্পানির সম্পত্তির মালিক, আমার স্বামী সবার প্রতি ইনসাফ করেই বণ্টন এবং আয়–ব্যয় বণ্টনের সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো ইউসুফ হাকিম সোহেল আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করে ২০২২ সালে কোম্পানির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ও এমডি নজরুল ইসলামের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তিনি নিজেকে চেয়ারম্যান এবং তাঁর আপন ছোট ভাই মোহাম্মদ মুসা শাকিলকে এমডি করে প্রতিষ্ঠানটির ভুয়া মালিক সেজে এবং এই কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারদের অজান্তে প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ হোসাইন ও পরিচালক মহসিন রেজার স্বাক্ষর নকল করে কোম্পানির দাউকান্দির ইলিয়টগঞ্জের ১৫৬ শতক জমি তাঁর বাবা আবদুল হাকিমের নামে লিখে নেন।’

কানিজ ফাতিমা আরও বলেন, ‘একজন ইসলামি দলের নেতা এভাবে যদি জনতার সঙ্গে প্রতারণা করেন, তাহলে তিনি এমপি হয়ে জনগণের কী উপকার করবেন? জালিয়াতির পরও বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধানের জন্য আমরা তাঁর সঙ্গে বারবার বসার চেষ্টা করেও কোনো সমাধান পাইনি।’

অভিযোগের বিষয়ে জামায়াত নেতা ইউসুফ হাকিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুরো বিষয়টি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। মুরাদনগরের এক বিএনপি নেতা ওই নারীকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করিয়েছেন। তাঁদের উদ্দেশ্য হলো ভোটের মাঠে আমাকে বিতর্কিত করা। এ ঘটনায় আমি চরমভাবে বিব্রত। আগামীকাল বা পরশু বিষয়টি নিয়ে আমি সংবাদ সম্মেলন করব। সেখানে আমি আমার পুরো বক্তব্য তুলে ধরব। তবে এটুকু বলতে পারি, ওই নারীর একটি কথাও সত্য নয়। সবই আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।’