
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে গ্রেপ্তার এক ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে থানা ঘেরাও করেছেন ওই ছাত্রলীগ নেতার স্বজন ও প্রতিবেশীরা। এ সময় থানা ঘেরাওকারীদের ওপর বিএনপির কর্মীরা হামলা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে আড়াইহাজার থানা চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেন প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তার সাগর হাসান মাহমুদপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও আড়াইহাজার সরকারি সফর আলী কলেজের ছাত্র। গতকাল রোববার রাতে মাহমুদপুর ইউনিয়নের কল্যান্দী এলাকা থেকে সাগরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি ওই এলাকার কবির হাসানের ছেলে।
ওসি এনায়েত বলেন, ‘সাগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংঘটিত দুটি হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি। তিনি একটি ঋণখেলাপির মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামি। দুপুরে তিনটি মামলাতেই তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছেন।’
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাতে গ্রেপ্তারের পর সকালে সাগরকে ছাড়িয়ে নিতে থানার সামনে জড়ো হন তাঁর আত্মীয় ও প্রতিবেশী কয়েকজন নারী। তাঁরা সাগরকে ‘নির্দোষ’ দাবি করে থানার সামনে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভের একপর্যায়ে পুলিশ থানার প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয়। থানা ঘেরাওয়ের পর স্থানীয় বিএনপি, মহিলা দল ও ছাত্রদলের কয়েকজন নারী কর্মী বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলার চেষ্টা করেন। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
থানা ঘেরাওয়ের সময় ঘটনাস্থলে থাকা সাগরের এক নারী আত্মীয় নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা থানায় যাইয়া জানতে চাইছি, কোন মামলায় সাগরকে গ্রেপ্তার করা হইছে। পুলিশ আমাদের কোনো তথ্য দিতেছিল না। তখন আমরা বিক্ষোভ করি। এ সময় থানার ওসি বিএনপির লোকজনকে খবর দিয়ে আমাদের উপর হামলা করিয়েছে।’
তবে ওসি এনায়েত হোসেন এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতার স্বজনেরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে পুলিশ থানার গেট বন্ধ করে দিয়ে ভেতরে অবস্থান নেয়। তখন এলাকার কিছু বিএনপি ও ছাত্রদলের নারী কর্মীরা বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে নিরাপত্তার স্বার্থে গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতার মাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। বাকিদের সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে।’
থানায় ছাত্রলীগ নেতার স্বজনদের ওপর হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সভাপতি ইউসুফ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। এমনটা হলে আমি জানতাম। আমি এ বিষয়ে খোঁজ নেব। এমন কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’