ময়মনসিংহের ভালুকায় পোশাকশ্রমিক দীপু দাস হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার তরুণ। আজ দুপুরে ময়মনসিংহের ডিবি কার্যালয়ে
ময়মনসিংহের ভালুকায় পোশাকশ্রমিক দীপু দাস হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার তরুণ। আজ দুপুরে ময়মনসিংহের ডিবি কার্যালয়ে

দীপু হত্যা মামলা

মরদেহ গাছে ঝুলিয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় নেতৃত্বদানকারী তরুণ গ্রেপ্তার: পুলিশ

ময়মনসিংহের ভালুকায় পোশাক কারখানার শ্রমিক দীপু চন্দ্র দাসকে (২৭) পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় আরও এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, হত্যার পর মরদেহ গাছে ঝুলিয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়া ওই তরুণকে ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে দীপু হত্যা মামলায় ১৯ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার তরুণের নাম নিবির ইসলাম অনিক (২০)। তিনি ত্রিশাল উপজেলার ধানীখোলা গ্রামের কালিমুল্লাহর ছেলে এবং পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস (বিডি) লিমিটেড কারখানার নিটিং অপারেটর ছিলেন। তাঁকে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে গাজীপুরের টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন চেরাগআলী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ তাঁকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানোর কথা আছে।

পুলিশ জানায়, ঘটনার পর ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায় সাদা শার্ট পরিহিত এক ব্যক্তি দীপুকে গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে টেনে তুলছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মুঠোফোনে ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তদন্তকারী দল নিবিরকে শনাক্ত করে। দীপু হত্যার ঘটনার পর থেকে নিবির নিজ কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। তাঁকে ধরতে নেত্রকোনা, বনানী ও গাজীপুরে অভিযানে পর টঙ্গী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, নিবিরকে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হলে আদালত কারাগারে পাঠান। তবে রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য হয়নি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য ব্যক্তিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে তদন্ত অব্যাহত আছে।

এর আগে গ্রেপ্তার ১৮ জনের মধ্যে ১২ জনকে ৩ দিন করে এবং বাকি ৬ জনকে দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ১২ আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ৫ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

ভালুকার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের ডুবালিয়াপাড়া এলাকায় ১৮ ডিসেম্বর রাতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস (বিডি) লিমিটেড কারখানার কর্মী দীপু চন্দ্র দাসকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে কারখানা থেকে এক কিলোমিটার দূরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় সড়ক বিভাজকের একটি গাছে বিবস্ত্র করে ঝুলিয়ে মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। নিহত দীপু চন্দ্র দাস তারাকান্দা উপজেলার বানিহালা ইউনিয়নের মোকামিয়াকান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। এ ঘটনায় তাঁর ভাই অপু চন্দ্র দাস গত শুক্রবার অজ্ঞাতপরিচয় ১৪০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।