Thank you for trying Sticky AMP!!

আজমেরী ওসমানের সহযোগী শামীমসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা, গ্রেপ্তার ৬

নারায়ণগঞ্জে জমি দখলের চেষ্টায় গুলিবর্ষণ করলে আজমেরী ওসমানের ক্যাডারদের কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন ও ভাঙচুর করেন এলাকার বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার দুপুরে বন্দর উপজেলার ফরাজিকান্দা এলাকায়

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে জমি দখলের চেষ্টাকালে গুলিবিদ্ধ করার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে আজমেরী ওসমানের সহযোগী আলী হায়দার শামীম ওরফে পিজা শামীমসহ ৪১ জনকে আসামি করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ মঈনুল হক ওরফে পারভেজের ছোট ভাই তানভীর আহমেদ বাদী হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বন্দর থানায় মামলাটি করেন।

এদিকে পুলিশ এই ঘটনায় এজাহারভুক্ত চার আসামি আজমেরী ওসমানের সহযোগী রায়হানজাদা রবি (৪৫), মামুন (৪৮), মনির হোসেন (৫২) ও কবির হোসেনসহ (৫৫) ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

আজমেরী ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর-বন্দর) আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের ছেলে। আর গুলিবিদ্ধ মঈনুল জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক আহ্বায়ক প্রয়াত রাইসুল হকের ছেলে।

Also Read: নারায়ণগঞ্জে আজমেরীর ক্যাডারদের জমি দখলের চেষ্টা, দুজন গুলিবিদ্ধ

বন্দর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. তাসলিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, জমি দখলের চেষ্টাকালে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করার ঘটনায় মঈনুল হকের ছোট ভাই বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২৫ থেকে ৩০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। এই ঘটনায় অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত চার আসামিসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

মামলার বাদী তানভীর আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের জমি দখল করতে এসে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর ভাইকে মঈনুল হককে গুলি করেছেন আসামি মামুন। তাঁর ভাইয়ের বা পায়ে গুলি লেগেছে। তাঁর ভাইকে বাঁচাতে ভাবি সোমা আক্তার এগিয়ে এলে তাঁরও বা পায়ে গুলি করেন পিজা শামীম। লাঠিসোঁটার আঘাতে পা ভেঙে গেছে। ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে (জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান) দুজনের পায়ে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তাঁরা সেখানে চিকিৎসাধীন। তাঁদের বসতঘরে হামলা ও ভাঙচুর এবং রান্নাঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মঈনুল হকের কয়েকজন স্বজন বলেন, আজমেরী ওসমান তাঁদের জমি জোর করে দখলে নিতে চান। তিনি লোক পাঠিয়ে বারবার তাঁদের হুমকি ধামকি দিয়েছেন। জমিতে সাইনবোর্ড লাগিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আজমেরী ওসমানের কাছে বারবার গেলেও তিনি ঘুরিয়েছেন। হামলার দুই দিন আগের রাতে বাড়িতে লোক পাঠিয়ে হুমকি দিয়েছেন।

এদিকে ওই ঘটনার পর থেকে মঈনুল হকের পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা দাবি করে মঈনুল হকের চাচা আবু তালেব প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা জমি পান, তাহলে তাঁরা কাগজপত্র নিয়ে বসুক। সেটি না করে আজমেরী ওসমান তাঁর লোকজন পাঠিয়ে জোর করে জমি দখল করে নিতে চান।

মামলার আসামিরা কার লোক জানতে চাইলে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, পিজা শামীমসহ তাঁর লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। পিজা শামীম ও মোটরসাইকেল বহর নিয়ে যাঁরা জমি দখল করতে আসছেন, তাঁরা কার লোক জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটাও আপনিসহ সবাই জানেন, তাঁরা কার লোক।’ এর বেশি কিছু বলতে মন্তব্য করতে চাননি।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে মোটরসাইকেল ও গাড়ির বহর নিয়ে বন্দর উপজেলার ফরাজীকান্দা এলাকায় প্রয়াত রাইসুল হকের মালিকানাধীন জমি দখল করতে যান আজমেরী ওসমানের ক্যাডাররা। বাধা দিলে গুলি করা হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হন মঈনুল হক ও তাঁর স্ত্রী সোমা আক্তার। আহত হন ১৫ জন। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ধাওয়া দিলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। সেখানে তাদের ফেলে যাওয়া দুটি মোটরসাইকেলে আগুন এবং দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।