
ঢাকার কেরানীগঞ্জে বুড়িগঙ্গা নদীর তীর দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে দুই দিনব্যাপী অভিযান শেষ করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
আজ বৃহস্পতিবার শেষ দিনে সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের আরেকটি বাগানবাড়ির (বাংলো) অবৈধভাবে নির্মাণ করা সীমানাপ্রাচীরসহ বেশ কিছু স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়। এর আগে গতকাল বুধবার অভিযানের প্রথম দিনে তাঁর অবৈধভাবে নির্মাণ করা একটি বাগানবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, আজ সকাল ১০টা থেকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়নের কাউটাইল ডকইয়ার্ড এলাকায় শুরু হওয়া এ অভিযান দোলেশ্বর এলাকা পর্যন্ত পরিচালিত হয়। এ সময় কাউটাইল এলাকায় নদীর তীর দখল করা নসরুল হামিদের বাগানবাড়ির একটি পাকা ভবন পুরোপুরি উচ্ছেদ করা হয়। আগের দিন ভবনটির একাংশ ভাঙা হয়েছিল। এ ছাড়া আজকের অভিযানে দোলেশ্বর এলাকায় নির্মিত তাঁর আরেকটি বাগানবাড়ির ৩৫ ফুট অবৈধ সীমানাপ্রাচীর, ৩০টি টং ও ছাপরাঘর এবং আরও ২৬৫ ফুট সীমানাপ্রাচীর উচ্ছেদ করা হয়েছে। এতে উদ্ধার হয়েছে প্রায় এক একর নদীর তীরভূমি। দুই দিনের অভিযানে মোট ৩৩টি অবৈধ স্থাপনা ও প্রায় ৫০০ ফুট সীমানাপ্রাচীর ভেঙে মোট প্রায় আড়াই একর জমি দখলমুক্ত করা হলো।
আজ বেলা দুইটার দিকে কোন্ডা ইউনিয়নের কান্দাপাড়া এলাকায় অভিযানকারীরা সুবেদ আলী নামের এক ব্যক্তির বাড়ির সীমানাপ্রাচীর ভাঙতে গেলে তিনি বাধা দেন। পরে সাত দিনের মধ্যে নিজ উদ্যোগে তিনি প্রাচীর অপসারণ করবেন বলে মুচলেকা দেন।
সুবেদ আলী বলেন, ‘নদীর পাড়ে আমাদের পূর্বপুরুষদের ৪০ বিঘা জমি ছিল। ইতিমধ্যে কয়েক বিঘা জমি নদীতে চলে গেছে। বাকি জমির খাজনা নিয়মিত পরিশোধ করে আসছি। নদীর জায়গায় নয়, আমরা ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গায় সীমানাদেয়াল নির্মাণ করেছি। আজ প্রশাসন এসে বলেছে, এটি নদীর জায়গা। তাই আমরা নিজ দায়িত্বে এ সীমানাদেয়াল ভাঙার মুচলেকা দিয়েছি।’
বিআইডব্লিউটিএর ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দখলদার ব্যক্তি যে-ই হোক না কেন, অবৈধ স্থাপনা ভেঙে নদীর জমি নদীকেই ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এ অভিযান চলমান থাকবে।
অভিযানে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ আবদুল্লাহ আল মামুন, বিআইডব্লিউটিএর ঢাকা নদীবন্দরের উপপরিচালক আবু সালেহ এহতেশাম, ঘোড়াশাল নদীবন্দরের উপপরিচালক নুর হোসেন ও মেঘনা নদীবন্দরের উপপরিচালক রেজাউল করিম অংশ নেন।