
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের প্রাধ্যক্ষের কক্ষে তালা দিয়েছেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে হল সংসদের জিএস আবিদুর রহমানসহ হল সংসদের নির্বাহী সদস্য ও শিক্ষার্থীরা প্রাধ্যক্ষের কক্ষে তালা দেন। পরে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খানের কাছে প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন।
অভিযোগপত্রে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, গত ১০ মাসে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক চৌধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান হলে কোনো সমস্যা সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখেননি। প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনে অবহেলা, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন তাঁরা। অভিযোগে বলা হয়, প্রাধ্যক্ষ দায়িত্বে থাকলেও নিয়মিত হলে অবস্থান করেন না এবং বাইরে গেলে কারও কাছে দায়িত্ব দিয়ে যান না।
শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, হলের স্টোরের মালামাল নিয়মবহির্ভূতভাবে বিক্রি করা হয়েছে, যেখানে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি ভাঙা দরজা–জানালা মেরামত, দ্বিতীয় ডাইনিং চালু ও সাইকেল স্ট্যান্ড স্থাপনের মতো মৌলিক সুবিধা নিশ্চিতে কোনো উদ্যোগ নেননি প্রাধ্যক্ষ।
অভিযোগ সম্পর্কে হল সংসদের জিএস আবিদুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বাজেট পেলেও হলের উন্নয়নে প্রাধ্যক্ষ কোনো কাজ করেননি। আমরা কথা বলতে গেলে তিনি আমাদের “নেতা” বলে ব্যঙ্গ করেন। হল সংসদের ভিপির মৌখিক সম্মতি নিয়েই আমরা তালা দিয়েছি এবং প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, সহ–উপাচার্য তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন, বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল সোমবার আলোচনা হবে।
অভিযোগের বিষয়ে শাহ আমানত হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক চৌধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তাঁর দাবি, হলের ভিপি থেকে শুরু করে সবার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো। কাউকে ব্যঙ্গ বা অসম্মান করে তিনি কথা বলেননি। তিনি বলেন, ‘হলের যেকোনো উন্নয়নমূলক কাজ বাজেট ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভরশীল। সাইকেল স্ট্যান্ড নির্মাণে আমি উদ্যোগ নিলেও প্রশাসন জানিয়েছে বড় বাজেট প্রয়োজন, তাই দ্রুত কাজ এগোয়নি।’
ডাইনিং–সংক্রান্ত প্রশ্নে প্রাধ্যক্ষ জানান, আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য ডাইনিং ঠিকভাবেই চলছে। সমস্যা তৈরি হয়েছে বাইরের শিক্ষার্থীদের খাবার–সুবিধা নিয়ে। বর্তমানে তিনি ক্যাম্পাসে নেই, তবে তাঁকে অফিস থেকে জানানো হয়েছে। তিনি ক্যাম্পাসে এসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন।
এ বিষয়ে জানতে হলে ভিপি জাহাঙ্গীর আলমের ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। একইভাবে সহ–উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খানকেও ফোনে পাওয়া যায়নি।