নওগাঁয় ইউপি কার্যালয় থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার, দুই গ্রাম পুলিশ গ্রেপ্তার
নওগাঁর পোরশা উপজেলার নিতপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয়ের একটি কক্ষ থেকে গতকাল শুক্রবার রাতে লাফারু ইসলাম (৩২) নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। লাফারুর স্বজনদের অভিযোগ, চোর সন্দেহে লাফারুকে মারধর করে ইউপি কার্যালয়ের একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। পরে তিনি সেখানে আত্মহত্যা করেন।
লাফারু ইসলাম উপজেলার নিতপুর মাস্টারপাড়া গ্রামের কুরানু ইসলামের ছেলে।
এ ঘটনায় লাফারুর মা ছলেহা বেগম বাদী হয়ে দুই গ্রাম পুলিশ ও অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করে গতকাল রাতে পোরশা থানায় মারধর ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেন। পরে মামলার আসামি অভিযুক্ত দুই গ্রাম পুলিশকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নিতপুর ইউপি কার্যালয়ে কর্মরত গ্রাম পুলিশ শাহজাহান আলী ও আবদুর রহিম।
পোরশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল ইসলাম বলেন, ইউপি কার্যালয়ে একজন আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পাওয়ার পর গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে পুলিশ সেখানে গিয়ে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশটি উদ্ধার করে। ইউপি কার্যালয়ের গ্রাম আদালত কক্ষে লাশটি ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছিল। লাশের পা ও হাতে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য আজ শনিবার সকালে মরদেহ নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ওসি বলেন, এ ঘটনায় করা যুবকের মায়ের মামলায় দুই গ্রাম পুলিশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত করে এ ঘটনার সঙ্গে আর কেউ জড়িত থাকলে তাঁদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
মামলার বাদী ছলেহা বেগম বলেন, ‘হামার স্বামী অসুস্থ। কাজকাম করতে পারে না। লাফারুই দিনমজুরি করে সংসার চালাত। গতকাল জুমার নামাজের আগে দুজন চৌকিদার (গ্রাম পুলিশ) অ্যাসে লাফারুক বাড়িত থ্যাকে ধরে লিয়ে যায়। হামার ব্যাটা (ছেলে) নাকি সাইকেল চুরি করেছে, তাই চেয়ারম্যান নাকি অকে (তাঁকে) ধরে লিয়ে য্যাতে বলেছে। চৌকিদারেরা হামার ব্যাটাক এখান থ্যাকেই মারতে মারতে লিয়ে গেল। পরে শুনি হামার ব্যাটা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করিছে। দৌড়ে গিয়ে দেখি পরিষদের একটা ঘরত ফ্যানের সঙ্গে হামার ব্যাটার লাশ ঝুলোছে। হামার ব্যাটাক অন্যায়ভাবে ধরে লিয়ে মারধর করায় আত্মহত্যা করিছে। হামি এর বিচার চাই।’
নিতপুর ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক বলেন, ‘গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাইকেল চুরির অভিযোগ ইউপিতে কর্মরত দুই গ্রাম পুলিশ লাফারুকে ধরে নিয়ে কার্যালয়ের কক্ষে আটকে রাখেন। তাঁকে সেখানে মারধর করা হয়েছে কি না আমার জানা নেই। শুক্রবার হওয়ায় আমি কিংবা পরিষদের কোনো সদস্যই ইউপি কার্যালয়ে ছিলাম না। তাঁকে ধরে আনার নির্দেশও আমি দিই নাই। ধরে আনার পর একজন গ্রাম পুলিশ বিষয়টি আমাকে ফোনে জানান। আমি তাঁকে বলি, জুমার নামাজ শেষে দুইটা থেকে তিনটার দিকে আমি কার্যালয়ে যাব। তাঁরা লাফারুকে ইউপি কার্যালয়ের গ্রাম আদালত কক্ষে আটকে রেখে নামাজ পড়তে যান। নামাজ শেষে তাঁরা এসে দেখেন, লাফারু গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। জানার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে যাই এবং থানার ওসিকে ফোন করে বিষয়টি জানাই।’
আরও পড়ুন
-
পাঠ্যবই থেকে আলোচিত ‘শরীফার গল্প’ বাদ দিতে সুপারিশ বিশেষজ্ঞ কমিটির
-
ফোর্বসের এশিয়ার তরুণ উদ্যোক্তাদের তালিকায় ৯ বাংলাদেশি
-
ছাগলনাইয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান ঘোষণা ছিল অবৈধ: হাইকোর্ট
-
কেজরিওয়ালকে নিয়ে বিজেপি দিশাহারা, ইডির আরজিও খারিজ
-
যুদ্ধ শেষে গাজায় শান্তিরক্ষী মোতায়েনের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের