বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার খবরে বগুড়া শহরের সূত্রাপুরের একটি বাড়ি সংস্কারের কাজ চলছে। কয়েক দিন ধরেই ‘গ্রিন এস্টেট কমপ্লেক্স’ নামে বাসাটিতে নতুন করে রং করাসহ ছোটখাটো সংস্কারকাজ চলতে দেখা গেছে।
দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত তারেক রহমান বগুড়ায় এসে শহরের সূত্রাপুর রিয়াজ কাজী লেনে ‘চম্পা মহল’ নামের একটি বাসভবনে থাকতেন। পরে চম্পা মহলের পাশেই চার শতক জায়গার ওপর নির্মিত হয় ‘গ্রিন এস্টেট কমপ্লেক্স’। ১৯৯৮ সাল থেকে বগুড়ায় এলে চারতলাবিশিষ্ট এ বাসভবনে থাকতেন বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। ২০০১ সালে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর তারেক রহমানকে ঘিরে দিনরাতে নেতা-কর্মীদের ভিড়ে সরগম থাকত বাড়িটি। তারেক রহমান লন্ডন যাওয়ার পর দীর্ঘ সময় বাড়িটি তালাবন্দী অবস্থায় ছিল। বাসায় কেউ বসবাস না করায় দরজা-জানালায় মরিচা পড়েছে। দেয়ালের রং উঠে জরাজীর্ণ হয়েছে, জানালার কাচে ধুলা জমেছিল।
আজ মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, ১৫-১৬ জন নির্মাণশ্রমিক সংস্কার কাজ করছেন। রঙের কাজ শেষে এখন চলছে ধোয়ামোছা ও আসবাব সাজানোর কাজ।
চম্পা মহল এবং গ্রিন এস্টেট নামে বাসা দুটির মালিক বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হেলালুজ্জামান তালুকদার (লালু)। বাসাটি সংস্কার কার্যক্রমের তিনিই দেখভাল করছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্রিন এস্টেট কমপ্লেক্সের চার শতক জায়গা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উপহার হিসেবে দিয়েছি। দলিল করে দিতে চাইলেও তিনি (তারেক রহমান) রাজি হননি। তবে কমপ্লেক্স নির্মাণের সব খরচ তিনিই দিয়েছেন।’
বাড়িটি সংস্কারের বিষয়ে হেলালুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘গ্রিন এস্টেটের মালিক তারেক রহমান নিজেই। বগুড়ায় নির্বাচনী প্রচারণায় এসে তিনি নিজের বাড়িতে থাকবেন—এটাই স্বাভাবিক। নিজের বাসায় থাকার বিষয়ে কাউকে আগে থেকে বলার প্রয়োজন নেই। আমি এ কমপ্লেক্স দেখভালের দায়িত্বে আছি। এ কারণে তারেক রহমানের দেশে ফেরার খবরে কমপ্লেক্সটি প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে আসবাব দিয়ে সাজানোর তদারকি করছি। তারেক রহমান বগুড়ায় এসে তাঁর নিজ বাড়িতেই উঠবেন।’
অবশ্য বগুড়া জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন বলেন, ‘লিডার (তারেক রহমান) বগুড়ায় এসে কোথায় উঠবেন, সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
একই তথ্য জানিয়েছেন বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিমও (বাদশা)। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তারেক রহমান যখন বগুড়ায় এসে গ্রিন এস্টেটে উঠতেন, তখন তিনি ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও দলের চেয়ারপারসনের ছেলে। এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছাড়াও আগামীর প্রধানমন্ত্রী। এখন তাঁর নিরাপত্তা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে। বগুড়ায় এসে তিনি কোথাও উঠবেন কি না, উঠলেও সেটা বাসভবন নাকি সরকারি সার্কিট হাউস হবে, সেটা নির্ভর করবে সম্পূর্ণ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং তাঁর নিরাপত্তায় নিয়োজিতদের সিদ্ধান্তের ওপর।