সকাল আটটার দিকে প্রতিদিনের মতো দাদির হাত ধরে স্কুলে যাচ্ছিল শিশুটি। স্কুলের সামনে পথচারী সাইনে পা দিতেই বালুবোঝাই একটি ট্রলি ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় শিশুটি। গুরুতর আহত হন দাদি।
আজ রোববার কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে কুষ্টিয়া শহরের ফুলতলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রেখেছে। আহত নারীকে একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত ইব্রাহিম ইসলাম ওরফে স্বপ্নীল (৪) কুষ্টিয়া শহরতলীর বটতৈল এলাকার আহসান হাবীবের ছেলে। ইব্রাহীম চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি ফুলতলা এলাকায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতীতি বিদ্যালয়ে প্লে শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল। তার মায়ের নাম জেসমিন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সানজিদা আক্তার বলেন, দাদি ও নাতি এসে সড়ক বিভাজকের ওপর দাঁড়ায়। সেখান থেকে নিচে এক পা ফেলে পথচারী পারাপার সাইনের ওপর দাঁড়ায় শিশু ইব্রাহিম। তার দাদি রাস্তায় নামার মুহূর্তে ছিলেন। এ সময় বালুবোঝাই ট্রলি শিশুটিকে চাপা দেয়। ট্রলির ধাক্কায় আহত হন শিশুটির দাদি। প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাত দূরে গিয়ে ট্রলিটি থামে। এ সময় চালক দৌড়ে পালিয়ে যান। আশপাশের লোকজন দাদি–নাতিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
এ ঘটনার পর প্রতীতি বিদ্যালয়ের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে কুষ্টিয়া–ঝিনাইদহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন বিক্ষুব্ধরা। মহাসড়কে অবৈধ ট্রলি চলাচল বন্ধ ও স্কুলের সামনে গতিরোধক দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।
শিশুটির মা জেসমিন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলে পাইলট হবি। ওরে এই পাইলট কন পাবো?’ তাঁর সঙ্গে থাকা এক প্রতিবেশী বলেন, জেসমিনের কয়েক মাস বয়সী আরেকটি ছেলেসন্তান আছে।
প্রতীতি বিদ্যালয়ের উপাধ্যক্ষ আনিসুর রহমান বলেন, ‘সকালে স্কুলে ছিলাম। হঠাৎ শুনতে পারলাম ট্রলির ধাক্কায় এক শিশু শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।’
আজ সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে যান কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পার্থ প্রতীম শীল, কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতোয়ার রহমানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তাঁরা স্থানীয় বাসিন্দাসহ অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন।