
‘আপনারা এত দিন দেখেছেন, টাকা না হলে স্কুলের মাস্টারের চাকরি হয় না অথবা দপ্তরির চাকরি হয় না, পিয়নের চাকরি হয় না, একটা কনস্টেবলের চাকরি হয় না। ইনশা আল্লাহ, টাকাপয়সার ব্যাপারে বিন্দুমাত্র কোনো ধরনের অনৈতিকতাকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। শুধু আপনি আপনার যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে চাকরি পাবেন। আমাকে অথবা আমার দলের কোনো নেতা-কর্মীর কাউকেই আপনাদের টাকাপয়সা দিয়ে, ঘুষ দিয়ে চাকরি নেওয়ার কোনো প্রয়োজন হবে না।’
আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার হরিনাথপুর হাইস্কুল মাঠে ৮ নম্বর মাহমুদপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আয়োজনে এক পথসভা হয়। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন। পথসভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ৩ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সভাপতি শরিফুল ইসলাম।
জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট ভাষায় তাদের সাবধান করে দিতে চাই, যারা আজকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, পেছনের দরজা দিয়ে জনগণের অধিকারকে আবারও কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। মনে রাখবেন, এই মাহমুদপুর শুধু নয়, সারা বাংলাদেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। কোনো অবস্থাতেই স্বৈরাচারের পুনরুত্থান বাংলাদেশের মানুষ আর গ্রহণ করবে না। যে বা যাঁরা জনগণের ভোটাধিকার ছাড়া ২০১৪ সালে সংসদে গিয়েছিলেন, ২০১৮ সালে রাতে ভোট দিয়েছিলেন, ২০২৪ সালে প্রার্থী পান নাই, তাঁরা আবার ষড়যন্ত্র করছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারিতে ইনশা আল্লাহ জাতীয় নির্বাচন হবে। ২০১৪, ২০১৮ বা ২০২৪ সালে আপনাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার অনেকেই সুযোগ পান নাই। অনেকেই যাঁরা এখানে উপস্থিত আছেন, তাঁদের অনেকেই এত বেশি গায়েবি মামলায় জর্জরিত ছিলেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনে ছিলেন, অনেকে বাড়িতে থাকতে পারেন নাই। খেতে-খামারে রাত্রী যাপন করতে হয়েছে। অনেকেই জেল-জুলুম সহ্য করেছেন। আমি নিজেও ১৪ মাস জেল খেটেছি।’
জিয়া পরিবারের কথা উল্লেখ করে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি অত্যাচার হয়েছে জিয়া পরিবারের ওপর। খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমানকে বিনা চিকিৎসায় প্রায় মেরে ফেলা হয়েছে। ২০১৫ সালে ২৪ জানুয়ারি তিনি (খালেদা জিয়া) তাঁর ছেলেকে যে ঠিকমতো দাফন করবেন, সে ব্যবস্থা করতে পারেন নাই। তখন তাঁকে পুলিশ দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছিল। আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ২০০৭ সালের পর তাঁর কোমর ভেঙে দেওয়ার মতো অবস্থা, উনি যখন পঙ্গু হয়ে যাচ্ছিলেন, তখন কোর্টের পারমিশনে (অনুমতিতে) চিকিৎসার জন্য তিনি দেশের বাইরে যান। তিনি সারা বাংলাদেশে ভোটাধিকার হারা, গণতন্ত্র হারা মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য ৮ হাজার কিলোমিটার দূর থেকে আমাদের সবাইকে সংগঠিত করেছেন। শুধু বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক দল যারা গণতন্ত্র চায়, মানুষের অধিকার চায়, ভোটাধিকার চায়, আইনের শাসন চায়, তাদের তিনি ঐক্যবদ্ধ করেছেন।’
পথসভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির দিনাজপুর জেলা শাখার সদস্য আবু তাহের, নবাবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তরিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, ঘোড়াঘাট পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর বিএনপির সভাপতি আবদুস সাত্তার, ৮ নম্বর মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি খলিলুর রহমান, ৩ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের প্রমুখ।