মা জহুর চাঁনের কোলে ফিরেছে নুর আলম
মা জহুর চাঁনের কোলে ফিরেছে নুর আলম

হারিয়ে যাওয়ার ১০ মাস পর যেভাবে মায়ের কাছে ফিরল কিশোর

১০ মাস আগে চুল কাটাতে বের হয়েছিল নুর আলম (১৩)। তারপর আর বাড়ি ফেরেনি। মা জহুর চাঁনের দীর্ঘশ্বাস, প্রতিদিনের অপেক্ষা আর কান্নার প্রহর শেষ হলো গতকাল বুধবার। পথ হারিয়ে ভারতে চলে যাওয়া এই কিশোর ফিরেছে মায়ের কাছে। ঘটনাটি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার দক্ষিণ তেঘরিয়া গ্রামের।

নুর আলমের বাড়ি দক্ষিণ তেঘরিয়া গ্রামে। বাবার নাম মাহবুব আলম, মা জহুর চাঁন। গত বছরের ৬ নভেম্বর নিখোঁজ হয়েছিল সে। ওই দিন বেলা দুইটার দিকে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

খোঁজাখুঁজির পরও সন্তানকে না পেয়ে গত বছরের ১৩ নভেম্বর হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন নুরের মা জহুর চাঁন। তদন্তের দায়িত্ব পান উপসহকারী পরিদর্শক (এসআই) মো. আলী আকবর। তিনি নুর আলমের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যতভাবে পারা যায় প্রচার করেন। সেখান থেকেই একসময় জানা যায়, ভারতের মুর্শিদাবাদের রানীনগর থানা হেফাজতে আছে কিশোরটি।

মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হওয়া যায়, নুর আলমকে স্থানীয় একটি হোমে রাখা হয়েছে। ভিডিও কলে তাকে মায়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেওয়া হয়।

এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই–প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে নুর আলমকে বাংলাদেশে হস্তান্তর করে। সেখান থেকে পুলিশ তাকে হবিগঞ্জে নিয়ে আসে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে মায়ের কাছে বুঝিয়ে দেয়।

নুর আলমের ভাষ্য, সে রাজশাহীর একটি সীমান্ত দিয়ে ভারতে ঢুকে পড়েছিল। পথ হারিয়ে আর দেশে ফিরতে পারেনি। ঠিকানা বলতে না পারায় মানুষের সহায়তায়ও বাড়ি ফেরার উপায় খুঁজে পায়নি। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম শাহাবুদ্দীন শাহীন বলেন, ছেলেটি ভারতে কীভাবে গেছে, সেটা স্পষ্ট করে বলতে পারেনি। রাজশাহী সীমান্ত দিয়ে গেছে দাবি করছে, তবে কোন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে গেছে, সেটি জানাতে পারেনি।