ফারুক হোসেন
ফারুক হোসেন

প্রতারিত ফারুকের নিঃসঙ্গ জীবন, ঘরে পড়ে ছিল মৃতদেহ

কয়েক বছর আগে ইতালি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের পীরগাজন গ্রামের ফারুক হোসেন (৩৫)। প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে টাকাপয়সা হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে একাকী জীবন বেছে নেন। বাড়ির পাশে একটি ঘর বানিয়ে একা একা থাকতেন। স্বজনদের কারও সঙ্গে মিশতেন না।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর নির্জন ঘর থেকে ফারুকের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি পীরগাজন গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবদুল আজিজের ছেলে। পুলিশ ও স্বজনদের ধারণা, তিন থেকে চার দিন আগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

নিহত ফারুকের ভগ্নিপতি ফজলুর রহমান জানান, তাঁর শ্যালক ফারুক হোসেন বছর পাঁচেক আগে ইতালিতে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়ে যান। শান্ত স্বভাবের সদালাপী ও হাস্যোজ্জ্বল ফারুক হোসেন ধীরে ধীরে বাক্‌রুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরিবার-পরিজন কিংবা কোলাহল ছেড়ে নির্জনতাকে বেছে নেন। স্বাভাবিক জীবন ছেড়ে বসতভিটার পাশে ঘর বানিয়ে প্রায় পাঁচ বছর ধরে একাকী বসবাস করে আসছিলেন। কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতেন না। কেউ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করলে বিরক্ত হতেন। নিজেই রান্না করে খেতেন। ঘর থেকে বের হতেন না।

ফজলুর রহমান বলেন, গতকাল দুপুরে ফারুকের ঘর থেকে পচা গন্ধ পেয়ে প্রতিবেশীরা সেখানে গিয়ে ঘরের মেঝেতে তাঁর অর্ধগলিত মরদেহ দেখে পরিবারকে জানান। তিনি বলেন, সাত থেকে আট দিন পরিবারের অন্য কারও সঙ্গে ফারুকের দেখাসাক্ষাৎ হয়নি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্ধ্যার পর তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে।

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর মরদেহ উদ্ধার করে গতকাল রাতে থানায় রাখা হয়। আজ বুধবার সকালে তাঁর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের ধারণা, তিন থেকে চার দিন আগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর স্বজনেরাও একই ধরনের ধারণা করছেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।